আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছে উত্তর ওয়াজিরিস্তানে আত্মঘাতী হামলায় সাত পাকিস্তানি সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। ইসলামাবাদ ও কাবুলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গতকাল এ আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ সম্প্রতি সীমান্তে তুমুল যুদ্ধে জড়িয়েছিল। সংঘর্ষের মধ্যে পাকিস্তান আফগানিস্তানের ভিতরে একাধিক বিমান হামলাও চালায়।
এ সংঘাতে অনেক মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার পর এক সময়কার মিত্র দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা গতকাল শেষ হওয়ার কথা ছিল। উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এক ক্যাম্পে জঙ্গিদের আত্মঘাতী হামলায় ওই সাত সেনাসদস্য নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। হামলাকারী এক জঙ্গি একটি বিস্ফোরকবোঝাই যান নিয়ে সামরিক ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত একটি দুর্গের সীমানা দেয়ালে ধাক্কা দেন; ক্যাম্পের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করা বাকি দুই জঙ্গি গুলিতে নিহত হয়েছে, বলেছেন তারা। এ প্রসঙ্গে রয়টার্স মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সাড়া পায়নি। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পর দেশটির ক্ষমতায় ফেরা তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে জঙ্গি হামলা বড় বাধা হয়ে আছে। সম্প্রতি দ্ইু দেশের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের পেছনেও এই জঙ্গি সংশ্লিষ্টতাই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।-রয়টার্স
পাকিস্তানের অভিযোগ, তাদের দেশের ভেতর যে জঙ্গিরা হামলা চালাচ্ছে, আফগানিস্তান তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, একাধিক সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানের ব্যাপারে ধৈর্য হারিয়ে ফেলায় ইসলামাবাদ ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ নিয়েছে, এরপরও তারা সংঘাত নিরসনে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তালেবান পাকিস্তানে হামলা চালানো জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আঙুল তুলে বলছে, তারা আফগানিস্তান নিয়ে অপতথ্য ছড়াচ্ছে, সীমান্তে উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে এবং আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করতে আইএসআইএস-সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে। ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। দুই দেশের মধ্যে আগে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও চলতি মাসেই কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে সংঘাত দেখা গেছে। এ সংঘর্ষ থামাতে সৌদি আরব ও কাতারকেও ছুটে আসতে হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সংঘাতের সমাধানে তিনিও সহায়তা করতে পারেন। -রয়টার্স