১৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ নির্মাণ করা হচ্ছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায়। এটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় সৌর শক্তিচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ১৩১.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। প্রকল্পটির শতকরা ৫২ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যেই সমাপ্ত। এটি বাস্তবায়ন হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বহুমুখীকরণের পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ কমবে। এ ছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
জানা গেছে, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার সীমানাঘেঁষে ১৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। চলতি বছরের মধ্যেই চালু হবে ১১৫ মেগাওয়াট এসি এবং ১৪০ মেগাওয়াট ডিসি বিদ্যুৎ উৎপাদন। উপজেলার বোহাইল ইউনিয়নের উত্তর শংকরপুর গ্রামের সীমানার সঙ্গে জামালপুর মাদারগঞ্জ কাইজার চরে নির্মিত এ প্রকল্পের নামকরণ করা হয়েছে মাদারগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্লান্ট। পরে প্রকল্পটির ব্যয় বাড়িয়ে ১৪০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। প্রায় ৩২৫ একর জমিতে ইতোমধ্যেই মাটি ভরাট কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। এখন শুধু পুরো প্রকল্পের চারপাশে মেইন্টেনেন্সের কাজ চলমান রয়েছে। বড় বড় আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে মাটি সমানের কাজ। কয়েক দিনের মধ্যেই সোলার প্যানেল বসানোর কাজ শুরু করা হবে। তখন এটি এ অঞ্চলের একটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৩ জুন জামালপুরের মাদারগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে চিনের ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি সিআরইসি এবং বাংলাদেশ সরকারের বিআর পাওয়ারজেন লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সিআইআরই, চায়না এবং বি-আর পাওয়ারজেন লিমিটেডের মধ্যে জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানির শেয়ার সিআইআরইয়ের ৭০ শতাংশ ও বি-আর পাওয়ারজেন-এর ৩০ শতাংশ। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে আসবে কোম্পানিটি। প্রকল্পে পুনর্বাসন কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মসজিদ, মার্কেট, পুকুর ও কবরস্থানসহ ২৪১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩১.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বি-আর পাওয়ারজেন-এর পক্ষে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ধূর্জটী প্রসাদ সেন এবং সিআইআরইয়ের পক্ষে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঝিউসেন ওয়াং চুক্তিতে সই করেন।
প্রকল্প পরিচালক ফেরদৌস রহমান জানান, ২০১৭ সাল থেকে দেশে এ পর্যন্ত সাতটি সোলার পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১৩০ মেগাওয়াট। পার্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। যার মোট উৎপাদনক্ষমতা ৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু জামালপুর পাওয়ার প্লান্টের একাই উৎপাদনক্ষমতা হবে ১৪০ মেগাওয়াট। তাই এটি দেশের সর্ববৃহৎ সৌরশক্তিচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে চলেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বহুমুখীকরণের পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ কমবে। এ ছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।