একাধিক সুগন্ধির এলোমেলো স্তরবিন্যাস নয়, বরং সুচিন্তিতভাবে বিভিন্ন সুগন্ধি মিশিয়ে একটি নতুন ও অনন্য ঘ্রাণ তৈরি করাই হলো ফ্র্যাগরেন্স লেয়ারিং। এটি বিশেষ সুবাস নয়, অনন্য শিল্পও।
ভালোবাসা প্রকাশের ভঙ্গিতেই সাধের লিপস্টিক নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো, একই ধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করলে আপনার ব্যক্তিত্ব হারিয়ে যেতে পারে। তাই একাধিক সুগন্ধির এলোমেলো স্তরবিন্যাস নয়, বরং সুচিন্তিতভাবে বিভিন্ন সুগন্ধি মিশিয়ে একটি নতুন ও অনন্য ঘ্রাণ তৈরি করাই হলো ফ্র্যাগরেন্স লেয়ারিং। এটি কেবল নিজের জন্য একটি বিশেষ সুবাস তৈরি করার কৌশলই নয়, বরং সুগন্ধিকে দীর্ঘস্থায়ী করার এক অনন্য শিল্প।
► ফ্র্যাগরেন্স লেয়ারিং কী?
ফ্র্যাগরেন্স লেয়ারিং মানে একাধিক পারফিউম একসঙ্গে স্প্রে করা নয়, বরং একই ব্র্যান্ডের বডি ওয়াশ, লোশন, বডি অয়েল এবং পারফিউম ধাপে ধাপে ব্যবহার করে একটি সুসংহত সুগন্ধ তৈরি করা। এটি সুগন্ধের গভীরতা বাড়ায় এবং দীর্ঘ সময় তার প্রভাব ধরে রাখে। লেয়ারিং শুরু করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ফ্র্যাগরেন্স গিফট সেট ব্যবহার করা। এই সেটগুলোতে একই সুগন্ধের বডি ওয়াশ, লোশন এবং পারফিউম থাকে, যা দারুণ সহায়ক।
► লেয়ারিংয়ের সুবিধা
► অনন্য সুগন্ধ তৈরি : বিভিন্ন সুগন্ধি মিশিয়ে আপনি একটি সম্পূর্ণ নতুন এবং স্বতন্ত্র ঘ্রাণ তৈরি করতে পারেন।
► দীর্ঘস্থায়ী সুবাস : ধাপে ধাপে বডি কেয়ার পণ্য ও পারফিউম ব্যবহার করলে সুগন্ধ ত্বকে দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়।
► সৃজনশীলতা প্রকাশ : এটি আপনার মুড, ব্যক্তিত্ব বা অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিলিয়ে সুগন্ধ তৈরি করার স্বাধীনতা দেয়।
► লেয়ারিংয়ের কৌশল
ফ্র্যাগরেন্স লেয়ারিংয়ের সময় সুগন্ধির নোট সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি :
► টপ নোট : প্রথম স্প্রে করার পর যে ঘ্রাণটি পাওয়া যায় (যেমন : সাইট্রাস, হালকা ফুল)।
► হার্ট নোট : মূল ঘ্রাণ যা কিছুক্ষণ পর প্রকাশ পায় (যেমন : জেসমিন, গোলাপ)।
► বেস নোট : শেষ পর্যন্ত যে ঘ্রাণটি দীর্ঘস্থায়ী হয় (যেমন : স্যান্ডালউড, মাস্ক, ভ্যানিলা)।
► লেয়ারিং বিষয়ে মনে রাখা ভালো-
১. একসঙ্গে খুব বেশি পারফিউম মেশাবেন না।
২. একে অপরের পরিপূরক এমন নোট বেছে নিন।
৩. আগে হালকা, পরে ভারী নোটের সুগন্ধি ব্যবহার করুন।
► ত্বকের ধরন অনুযায়ী লেয়ারিং
► শুষ্ক ত্বক : শুষ্ক ত্বকে সুগন্ধ বেশি সময় টেকে না। তাই পারফিউম স্প্রে করার আগে বডি অয়েল বা লোশন ব্যবহার করলে ঘ্রাণ দীর্ঘস্থায়ী হবে।
► তৈলাক্ত ত্বক : তৈলাক্ত ত্বকে সুগন্ধ তুলনামূলকভাবে বেশি সময় ধরে থাকে।
► আবহাওয়ার ধরন অনুযায়ী লেয়ারিং
► গ্রীষ্মকাল : এই সময়ে হালকা, সাইট্রাস বা ফ্লোরাল নোটের পারফিউম ব্যবহার করা উচিত। শাওয়ার জেল ও বডি স্প্যাশের সঙ্গে লেয়ারিং আদর্শ।
► শীতকাল : শীতকালে উডি, মাস্কি, স্পাইসি বা ভ্যানিলার মতো ভারী নোটের পারফিউম ব্যবহার করা যেতে পারে। বডি অয়েল ও লোশনের সঙ্গে লেয়ারিং করলে এর গভীরতা আরও বাড়ে।
সঠিক জায়গায় যেমন ঘাড়, কবজি ও কানের পেছনে পারফিউম স্প্রে করলে এবং ক্রম অনুযায়ী লেয়ারিং করলে আপনার সুগন্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে।