নানা কারণে প্রায়শই খবরের শিরোনামে থাকে ওড়িশার কটক শহর। এই শহরটি বর্তমানে থমথমে। দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে গত দুই দিন ধরে চলা সংঘর্ষের পর শহরজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত শনিবার ভোর রাতে। দরগা বাজার এলাকা দিয়ে একটি দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন শোভাযাত্রা কাঁঠাজোড়ি নদীর দিকে যাচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময় স্থানীয় একদল মানুষ উচ্চ শব্দে বাজনা বাজানো নিয়ে আপত্তি জানায়।
এই বচসা দ্রুত সহিংস রূপ নেয়। শোভাযাত্রার সদস্যরা পাল্টা জবাব দিলে ছাদ থেকে পাথর ও কাঁচের বোতল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। এই সংঘর্ষে কটকের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (ডিসিপি) খিলারি হৃষিকেশ জ্ঞানদেওসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জও করতে হয়। এখনও পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি, ড্রোন ও মোবাইলের ফুটেজ দেখে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। পুলিশ কমিশনার এস দেব দত্ত সিং জানিয়েছেন, পাথর ছোড়ার ঘটনায় জড়িতদের সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। আরও গ্রেফতার হবে। গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডিসিপি-র অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।
শনিবারের ঘটনার পর শহর যখন কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছে, তখনই রবিবার সন্ধ্যায় ফের উত্তেজনা ছড়ায়। জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) একটি মোটর সাইকেল র্যালি করে। র্যালিটি সংঘর্ষের কেন্দ্রস্থল দরগা বাজার হয়ে যায়।
অভিযোগ, এই সময় পথের সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙা হয় এবং গৌরীশঙ্কর পার্ক এলাকায় একাধিক দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পুলিশ বলপ্রয়োগ করে জমায়েত ছত্রভঙ্গ করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সহিংসতা ও উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ওড়িশা সরকার কটক মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সিএমসি), কটক ডেভলপমেন্ট অথরিটি (সিডিএ) এবং সংলগ্ন ৪২ মৌজা এলাকায় রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করেছে। গুজব ছড়ানো এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক বার্তা দেওয়া বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
ইতিমধ্যে, দরগা বাজারসহ সংবেদনশীল এলাকায় ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া, শান্তি বজায় রাখতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল