আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন। আলোচনার পরেও কোনও ইতিবাচক ফল না আসায়, ভারত এবার সক্রিয়ভাবে সমস্যা সমাধানের পথে হাঁটতে চাইছে। এই বিষয়ে নয়াদিল্লিতে রবিবার এক আলোচনাসভায় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে চাইছে ভারত। রবিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট জানিয়েছেন, বাণিজ্য নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে সমস্যার সমাধানে ভারত সক্রিয়ভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তার মতে, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে একটি বাণিজ্য সমঝোতায় পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি।
তবে একই সঙ্গে তিনি ভারতের উপর চাপানো মার্কিন শুল্ককে 'অন্যায্য' বলেও উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে ভারতীয় পণ্যের উপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপানো মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রয়েছে। প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছিল, পরে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপায় আমেরিকা। ভারত ছাড়া একমাত্র ব্রাজিলের উপরই এমন উচ্চ হারে শুল্ক চাপানো হয়েছে।
এস জয়শঙ্কর বলেন, আমাদের সঙ্গে আমেরিকার কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা এখনও পর্যন্ত বাণিজ্য আলোচনায় কোনও সমঝোতায় পৌঁছোতে পারিনি। এর ফলে আমাদের উপর শুল্ক চাপানো হয়েছে। আমরা প্রকাশ্যে বলেছি এটি অন্যায্য।
শুধু মার্কিন শুল্কই নয়, রাশিয়া থেকে ভারত তেল কেনায় আমেরিকার অস্বস্তি এবং তার জন্য চাপানো 'জরিমানা' শুল্ককেও তিনি অন্যায় বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, বিশ্বের বৃহত্তম বাজারগুলির মধ্যে একটি আমেরিকার বাজার, তাই বাণিজ্যে একটি সমঝোতা থাকা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চললেও, জুলাই মাসে ভারতের উপর শুল্ক চাপানোয় সম্পর্কে আরও তিক্ততা বাড়ে। তবে আশার কথা হলো, সম্প্রতি ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে পুনরায় বাণিজ্য আলোচনা শুরু হয়েছে। গত মাসেই দিল্লিতে এসে বৈঠক করে গিয়েছেন আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের প্রধান।
অন্যদিকে, রাশিয়া এই বিষয়ে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আশ্বাস দিয়েছেন, ট্রাম্পের শুল্কের কারণে ভারতের যা ক্ষতি হচ্ছে, তা রাশিয়া পুষিয়ে দেবে। মস্কো ভারত থেকে আরও বেশি করে পণ্য কেনার কথা ভাবছে, যাতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল