কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন সড়ক দখল হয়ে গেছে। ভ্রাম্যমাণ দোকানের কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ভোগে পড়ছেন লাখো নগরবাসী। কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়, নজরুল এভিনিউ, মনোহরপুর, রাজগঞ্জ, ছাতিপট্টি, চকবাজার, মোগলটুলী, ফৌজদারী, রানীর বাজার, রেসকোর্স, লাকসাম রোড, টমছমব্রিজ এলাকায় এই দৃশ্য বেশি দেখা যায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কান্দিরপাড় টাউনহলের সামনের ফুটপাতে বসেছেন কাপড় বিক্রেতারা। নিচে সড়কে শরবত, পপকর্ন বিক্রেতা। এরপর সড়কে যেখানে সেখানে রয়েছে অটোরিকশার স্ট্যান্ড। গাড়ি ও পথচারীর জন্য সড়ক নেই বললেই চলে। টমছমব্রিজ সংলগ্ন কোটবাড়ী সড়কের মুখে অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এরপর রামমালা পশু গবেষণা কেন্দ্র পর্যন্ত ড্রেনের ওপর অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে স্থায়ী দোকান। ৩০ ফুট সড়কের ১০ ফুট স্থায়ী দোকান, ১০ ফুট অস্থায়ী দোকান। বাকি ১০ ফুটে লেগে থাকে যানজট। কান্দিরপাড় মোড়ে দোকানের সামনে ফলের দোকান বসানোর কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। নজরুল এভিনিউয়ের প্রবেশপথে ফুটপাত ও সড়ক দখল করে দোকান বসানো হয়েছে। সিটি করপোরেশন নামমাত্র অভিযান চালালেও পরের দিন অবৈধ দোকানিরা পুনরায় বসে যান। সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার ১৪ বছরেও জনবল কাঠামো অনুমোদন হয়নি। বর্তমানে যে জনবল আছে তা দেশের তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা থেকেও কম। মৃত্যু, অবসর ও বদলিতে তা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৬৭ জনে।
কুমিল্লা ভাষাসৈনিক অজিতগুহ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ১৪ বছরেও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের জনবল কাঠামো অনুমোদন হয়নি, যা দুঃখজনক। দ্রুত জনবল ও ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে সিটি করপোরেশন তার সক্ষমতা প্রমাণ করবে বলে আশা করছি। কুমিল্লা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির মাসউদ বলেন, সড়ক ও ফুটপাত দখলে কুমিল্লা নগরীতে যানজট ও দুর্ঘটনায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে এসব দখল মুক্ত করা হোক।
কুমিল্লা কৃষি ও কারিগরি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আখন্দ বলেন, কুমিল্লার কান্দিরপাড় ও টমছমব্রিজ কোটবাড়ী সড়কে যত্রতত্র দোকান বসছে। সিটি করপোরেশন ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান উচ্ছেদ করতে হবে। নয়তো নগরী দিনদিন অচল হয়ে পড়বে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহ আলম বলেন, তিনি নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন। কোথায় কী সমস্যা আছে তা সরেজমিন গিয়ে দেখছেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে জনবল সংকট আছে। জনবল কাঠামো অনুমোদন হলে আরও ভালো নাগরিক সেবা দেওয়া যাবে। আশা করছেন, দ্রুত জনবল কাঠামো অনুমোদন হবে।
তিনি আরও বলেন, সমস্যা অনেক, সমাধান করা কঠিন, তবে তা অসম্ভব নয়। সবার সহযোগিতা পেলে এ সমস্যা সমাধান করা সহজ হবে। দ্রুত কাজ করতে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়েও আমরা কাজ করছি।