উইঘুর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জিহাদি যোদ্ধাদের চীনের কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা নিয়েছে সিরিয়া।
সোমবার দুটি সূত্র সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে। বিষয়টি এমন সময় প্রকাশ্যে এল যখন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি প্রথমবারের মতো চীন সফর করছেন।
প্রায় এক বছর আগে দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাতের পর থেকে সিরিয়ার নতুন ইসলামপন্থী কর্তৃপক্ষ তাদের জিহাদি অতীত থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে এবং বছরের পর বছর আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতার পর দেশের কূটনৈতিক উপস্থিতি পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে।
চীনের উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জিহাদিরা ২০১১ সালে যুদ্ধ শুরুর পর আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সিরিয়ায় যায়, যাদের একটি বড় অংশ আইডলিব প্রদেশভিত্তিক উইঘুর-প্রধান জিহাদি গোষ্ঠী তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টিতে (টিআইপি) যোগ দেয়।
উইঘুর যোদ্ধাদের বিষয়টি বেইজিং সফরে শাইবানির আলোচ্যসূচিতে থাকার কথা ছিল বলে সিরিয়ার এক সরকারি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমকে জানায়। তিনি আরও জানান, “চীনের অনুরোধের ভিত্তিতে দামেস্ক যোদ্ধাদের ধাপে ধাপে হস্তান্তর করতে চায়।”
সূত্রটি আরও জানায়, চীন এই যোদ্ধাদের নতুন সিরীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
সিরিয়ায় অবস্থানরত এক কূটনৈতিক সূত্র, তিনিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “সিরিয়া আসন্ন সময়ে ৪০০ উইঘুর যোদ্ধাকে চীনের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।”
শাইবানির সফরের সময় সোমবার চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই ‘যত দ্রুত সম্ভব শান্তি অর্জনে’ দামেস্ককে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “সিরীয় পক্ষ অঙ্গীকার করেছে যে, কোনও সত্ত্বাকে সিরিয়ার ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না যাতে চীনের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “চীন এই অঙ্গীকারের প্রশংসা জানিয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেছে যে, সিরিয়া এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে, যাতে চীন-সিরিয়া সম্পর্কের স্থিতিশীল উন্নয়নে থাকা নিরাপত্তা-বাধাগুলো দূর হয়।”
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, এখনও তিন হাজার ২০০ থেকে চার হাজার উইঘুর যোদ্ধা সিরিয়ায় রয়েছে এবং তারা নতুন সিরীয় সেনাবাহিনীতে একটি ডিভিশন হিসেবে সংযুক্ত।
চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে চীন বিরত থাকে।
সে সময় জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, চীন ‘সন্ত্রাসবিরোধী বিষয় — বিশেষত সিরিয়ায় (বিদেশি সন্ত্রাসী যোদ্ধা) — নিয়ে বৈধ উদ্বেগ জানিয়েছে।’
ক্ষমতায় আসার পর সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, সব সশস্ত্র গোষ্ঠী বিলুপ্ত করা হয়েছে।
ডিসেম্বরে শারা সাবেক বিদ্রোহীদের সেনাবাহিনীর উচ্চ পদের জন্য মনোনীত করেন, যার মধ্যে একজন উইঘুরও ছিলেন যিনি টিআইপির সদস্য ছিলেন বলে অবজারভেটরি জানিয়েছিল। সূত্র: আল-আরাবিয়া
বিডি প্রতিদিন/একেএ