চট্টগ্রাম নগরে প্রথম বাস টার্মিনাল নির্মিত হয় ১৯৬৬ সালে, কদমতলীতে। এরপর দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মিত হয় ১৯৯৩ সালে, বহদ্দারহাটে। এরপর গত ৩৩ বছরে আর কোনো টার্মিনাল নির্মিত হয়নি। অবশেষে ৩৩ বছর পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে নগরের জালালাবাদ ওয়ার্ডের কুলগাঁও এলাকায় তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে এটি চালু করার কথা।
জানা যায়, চসিক সিটি বাস টার্মিনাল নির্মাণে ২০১৮ সালের অক্টোবরে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। নগরীর জালালাবাদ ওয়ার্ডের কুলগাঁও বালুচরা এলাকায় ৮ দশমিক ১০ একর জায়গায় টার্মিনালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়নি। তবে ইতোমধ্যে প্রকল্পের ভৌত কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের ড্রেন নির্মাণ, বাউন্ডারি ওয়াল, ভবন নির্মাণ ও ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী বছর জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করে ফেব্রুয়ারিতে সিটি বাস টার্মিনাল চালুর পরিকল্পনা আছে।
চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী রিফাতুল করিম বলেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে ইয়ার্ড, বাউন্ডারি ওয়াল ও ড্রেনের কাজ ৭০ শতাংশ শেষ। এ ছাড়া ভবনের কাজ শেষ হয়েছে ৫০ শতাংশ। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে চালুর লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। এটি চালু হলে উত্তর চট্টগ্রামের বাসগুলোকে আর সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। টার্মিনাল থেকেই শৃঙ্খলভাবে গন্তব্যস্থলে যেতে পারবে।
চসিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) করা চট্টগ্রাম সিটি মাস্টারপ্ল্যানে কুলগাঁও এলাকায় মোট ২৮ একর জমিতে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ রাখা হয়। চসিক প্রাথমিকভাবে ৮ দশমিক ১০ একর জায়গায় উন্নয়ন করে টার্মিনাল নির্মাণ করছে। প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের জন্য ২৬০ কোটি টাকা, ভূমি উন্নয়নে ৩ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা, অবকাঠামো উন্নয়নে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এই টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার ও আন্তঃনগর উভয় ধরনের বাসই ছাড়বে। টার্মিনালটিতে মোট ১৬০টি বাস-ট্রাক পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
টার্মিনালে থাকছে, প্রবেশপথে একটি তিনতলা সুদৃশ্য ভবন। এ ছাড়া একটি সিটি বাস টার্মিনাল, একটি আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল, ২৫টি যাত্রী বোর্ডিং লেন, ১৪টি অতিরিক্ত ওয়েটিং লেন, একটি বড় খোলা হলরুম এবং তথ্য কেন্দ্র, পুরুষ ও নারীদের জন্য টয়লেট, ২২টি টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বসার জায়গা, ওয়াইফাই সুবিধা, লাগেজ রুম, ট্যাক্সি বুকিং রুম, ফাস্ট এইড স্টেশন, রেস্তোরাঁ, এসি বাসের যাত্রীদের বসার জায়গা, বাস-ট্রাক মালিকদের জন্য অফিস এবং বাস কর্মচারীদের আবাসন কক্ষ থাকবে।