খাগড়াছড়িতে রবিবার পর্যন্ত ঘোষিত ‘স্থগিত অবরোধ’ কর্মসূচি পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল সকালে জুম্ম ছাত্র-জনতার মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, শহীদদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পুণ্যকর্ম সম্পাদন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মানবিক সহায়তা প্রদান এবং প্রশাসনের আশ্বাসকে আংশিক বিবেচনায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়, খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সংঘটিত সাম্প্রতিক নৃশংস গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে ১ অক্টোবর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা এনএসআইপ্রধান, জেলা ডিজিএফআইপ্রধান ও এএসপি তদন্তের উপস্থিতিতে জুম্ম ছাত্র-জনতার সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সংগঠনের আট দফা বাস্তবায়ন, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার এবং সংঘটিত হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস এবং শহীদ পরিবারের প্রতি নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদানের বিষয়টি জানানো হয়।
এদিকে খাগড়াছড়িতে বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। দূরপাল্লার ও আন্ত উপজেলার যাত্রীবাহী সব যানবাহন চলাচল করছে। পণ্যবাহী ট্রাকগুলোও বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করছে।
খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘অবরোধ, মিছিল, মিটিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনী টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। ১৪৪ ধারা রবিবার সকালে থাকবে না। ঢাকা-চট্টগ্রাম কুমিল্লা, ফেনীসহ বিভিন্ন জেলার যাত্রীবাহী বাস আসা-যাওয়া করছে। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকে পর্যটকবাহী পিকআপ গাড়ি চলাচল করছে।’
এদিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৮ পরিবার ও ব্যবসায়ীর মধ্যে ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে পার্বত্য জেলা পরিষদ। দুপুরে জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা নগদ অর্থ ও ত্রাণ বিতরণ করেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা ও ৩০ কেজি চাল দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, ‘সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে এ ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।’ উল্লেখ্য, ২৩ সেপ্টেম্বর সিঙ্গিনালায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়। এর প্রতিবাদে অবরোধ ডাকা হয়।