যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় গাজায় হামলা বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এ আহ্বান উপেক্ষা করে গাজা উপত্যকায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। এদিকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকের পরও শেষ হয়নি মানবতার অভিযান। ১১টি জাহাজ নিয়ে গাজা অভিমুখে ছুটছে নতুন নৌবহর। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ও থাউজ্যান্ড ম্যাডলিনস টু গাজার (টিএমটিজি) নেতৃত্বে যাত্রা করছে তারা। এ ছাড়া সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণকারী ১৩৭ অধিকারকর্মীকে ইসরায়েল থেকে তুরস্কে পাঠানো হয়েছে। তবে আটক অধিকারকর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। পুরো বিশ্বের নজর এখন গাজার দিকে। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় গাজায় হামলা বন্ধ করতে ইসরায়েলকে আহ্বান জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তাঁর আহ্বান উপক্ষো করে গতকাল মধ্যরাতে উপত্যকাটিতে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসিল জানান, গতকাল রাতটি ছিল বেশ সহিংস। ওই সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা সিটি ও অন্যান্য জায়গায় অসংখ্য বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করেছে। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে গতকাল দুপুর ১২টা ৪৫ পর্যন্ত গাজা সিটির আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে ১১ জনের লাশ আনা হয়। এ ছাড়া আল-শিফা, আল-আওদা এবং নাসের হাসপাতালেও লাশ আসার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে ট্রাম্প গাজায় হামলা বন্ধের নির্দেশনা দেওয়ার পর গাজা সিটির মানুষ নিজ বাড়িতে ফেরা শুরু করে। এরপর সাধারণ মানুষকে সতর্কতা দিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, ‘গাজা সিটিতে আমাদের সেনারা এখনো অভিযান চালাচ্ছে। গাজা সিটি অত্যন্ত বিপজ্জনক যুদ্ধপ্রবণ এলাকা। সেখানে ফিরলে প্রাণহানি ঘটতে পারে।’
এদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া ১৩৭ অধিকারকর্মীকে তুরস্কে পাঠানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি বাহিনী তাদের আটক করে জোরপূর্বক ইসরায়েলে নিয়ে গিয়েছিল। এ অধিকারকর্মীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, আলজেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, মরক্কো, সুইজারল্যান্ড, তিউনিসিয়া এবং তুরস্কের নাগরিক রয়েছেন।
এদিকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সব নৌযান ইসরায়েলের হাতে আটক হলেও গাজার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ও থাউজ্যান্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌবহর। এ বহরে ‘কনশানস’ নামে একটি বড় জাহাজ রয়েছে, যার আওতায় রয়েছে আরও আটটি নৌযান। বর্তমানে সব একসঙ্গে গাজা অভিমুখে রয়েছে। বহরে অংশ নেওয়া অধিকারকর্মীরা জানান, ‘আমরা কনশানসের মানুষ অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে অটল। যদি কেউ আমাদের আটকাতে চায়, তো আরও অনেকে সামনে এসে দাঁড়াবে। দমনপীড়নকারীরা কখনোই জনতার ঐক্য ও সংকল্প ভাঙতে পারেনি। ইসরায়েলও এ অভিযানের সামনে ব্যর্থ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। মুক্তি আসবেই, ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে।’