নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ভয়াবহ টর্নেডোয় অন্তত ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন। ঝড়ে গাছপালা উপড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘরচাপা পড়ে মারা গেছে অন্তত ৮টি গরু। গুরুতর আহত গুলসান বেগমকে (৪০) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচটি ওয়ার্ডের ১১টি পাড়ায় এ টর্নেডো আঘাত হানে। এতে মাঝাপাড়া, বানিয়াপাড়া, হাজীপাড়া, উত্তরপাড়া, পোদ্দারপাড়া, বাবুপাড়া, বৈরাগীপাড়া, মুন্সিপাড়া ও কালিরথানসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘরবাড়ি, ফসল ও গাছপালা ধ্বংস হয়। প্রায় দুই মিনিটের ঝড়ে পুরো এলাকা তছনছ হয়ে যায়।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন লিডার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তায় পড়া গাছ সরানো যাচ্ছে না। ঘরবাড়ির টিন উড়ে গিয়ে গাছ ও বাঁশবনে ঝুলছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন তাইফুল (৩০), তাসিন (২৫), রয়েল (৩০), গুলসান বেগম (৪০) ও আতিক (২২) এর নাম জানা গেছে। আহতদের কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন বলেন, “আমার ওয়ার্ডেই প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেকে এখন খোলা আকাশের নিচে।” ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জোনাব আলী জানান, পাঁচটি ওয়ার্ডের ১২টি পাড়ায় টর্নেডোয় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নীল রতন দেব বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আবাসিক মেডিকেল অফিসারের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসা দল পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম জানান, টর্নেডোয় ৩ হেক্টর জমির কলা, ২ হেক্টর সবজি ক্ষেত ও ৫ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ কিশোরগঞ্জের এজিএম রোমান ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে যাওয়ায় পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রীতম সাহা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চলছে। মেডিকেল, প্রাণিসম্পদ ও কৃষি বিভাগ যৌথভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল