বিজ্ঞানীরা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি মৃতপ্রায় তারকার ভেতরকার স্তর পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তারকার বিস্ফোরণের সময় তারা এটি দেখতে পান। এটাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়, সুপারনোভা বা শক্তিশালী তারকা বিস্ফোরণ।
বিজ্ঞানীরা জানান, সাধারণত সুপারনোভা বিস্ফোরণে তারকার স্তরগুলো মিশে যায়। ফলে ভেতরের গঠন স্পষ্টভাবে দেখা যায় না। কিন্তু এবার ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে অবস্থিত, ‘2021yfj’ নামের একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণের সময় ভেতরের স্তরগুলো পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে।
শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল, তারকার বাইরের হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম স্তর আগেই ঝরে গেছে। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো—ভেতরের ঘন স্তর, যেখানে সিলিকন ও সালফারের মতো ভারী উপাদান থাকে, সেগুলিও বিস্ফোরণে বাইরে ছিটকে গেছে।
আবিষ্কারক দলের সদস্য নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক স্টিভ শুলজে বলেন, এতটা স্তর ঝরে যাওয়া কোনো তারকা আমরা আগে কখনো দেখিনি।
হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টারের জ্যোতির্বিজ্ঞানী আনিয়া বলেন, এটি আমাদের বহুদিনের ধারণাকে আরও দৃঢ় করেছে। বড় তারকারা জীবনের শেষ দিকে একেকটি স্তরে সাজানো থাকে (বাইরে হালকা উপাদান, ভেতরে ভারী উপাদান)।
তবে এখনো পরিষ্কার নয়, তারকার স্তরগুলো কীভাবে এতটা কমে গেল। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, হয়তো তার শেষ সময়ের ভয়ংকর বিস্ফোরণে স্তরগুলো ছিটকে গেছে। অথবা কাছাকাছি থাকা যমজ তারকা সেগুলো টেনে নিয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, ভবিষ্যতে এমন আরও পর্যবেক্ষণ পাওয়া কঠিন হতে পারে। তবে এই আবিষ্কার তারকার মৃত্যু এবং মহাবিশ্বের গঠনের রহস্য বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল