ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় প্রবল বর্ষণের ফলে ভয়াবহ ভূমিধসে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে ধসে পড়েছে সেতু, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি ও রাস্তা, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দার্জিলিং ও সিকিমের সংযোগ সড়ক। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মিরিক ও সুখিয়াপোখরি এলাকায়।
গত ১২ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ে রেকর্ড ২৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ১৯৯৮ সালের পর এত ভয়াবহ পরিস্থিতি আর দেখা যায়নি। সড়ক, সেতু ভেঙে পড়ায় উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে পাহাড়ি এলাকায় আটকে পড়েছেন অসংখ্য পর্যটক।
দার্জিলিংয়ের সৌরেনি, দারাগাঁও, ডাম্ফেডার ও আপার দুধিয়ায় রাতভর ধসে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়ে, অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। মিরিকেই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF), রাজ্য পুলিশ ও সেনাবাহিনী। তবে টানা বৃষ্টিতে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
ভূমিধসে বিএসএফের একটি ক্যাম্পসহ নদীর পাশের অনেক হোমস্টে ও ঘরবাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
প্রতি বছর দুর্গাপূজার পর পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক দার্জিলিং ভ্রমণে যান। কিন্তু এই দুর্যোগে বহু পর্যটক হোটেল ও পাহাড়ি এলাকায় আটকে পড়েছেন। গোরখাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) ইতোমধ্যে টাইগার হিল, রক গার্ডেনসহ জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঐতিহ্যবাহী খেলনা ট্রেন চলাচল।
দার্জিলিং ছাড়াও উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সিকিমেও প্রবল বর্ষণের ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেখানে আগেই লাল সতর্কতা জারি করেছিল আবহাওয়া দপ্তর। আগামী ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের সতর্ক থাকতে এবং নিয়মিত আবহাওয়া ও সড়ক পরিস্থিতির হালনাগাদ জানতে বলেছে। দার্জিলিংয়ের এমপি রাজু বিস্টা বলেন, “পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। আমি সবসময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।”
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
বিডি প্রতিদিন/মুসা