চাঁদের মেরু অঞ্চলে মরিচা ধরা ধাতু বা ‘হেমাটাইট’ (এক ধরনের আয়রন অক্সাইড/লৌহ অক্সাইড) আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। সাধারণত মরিচা ধরার জন্য পানি ও অক্সিজেন লাগে। অথচ চাঁদে এ দুই উপাদানই খুব কম। তাই এ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের কাছে বিস্ময়কর মনে হচ্ছে।
চীনের ম্যাকাও ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষক জিলিয়াং জিন ও তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, এই আবিষ্কার পৃথিবী ও চাঁদের গভীর সম্পর্ক বোঝার নতুন দিক উন্মোচন করেছে। তাদের গবেষণা সম্প্রতি জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকদের ধারণা, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন বিশেষ পরিস্থিতিতে চাঁদে পৌঁছায়। প্রতি মাসে প্রায় পাঁচ দিন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে অবস্থান করে। এ সময় সূর্যের চার্জযুক্ত কণার প্রভাব কমে যায় এবং পৃথিবী থেকে নির্গত কণাগুলো চাঁদের গায়ে লাগে। এই প্রবাহকে বলা হয় আর্থ উইন্ড। এভাবেই অক্সিজেন চাঁদে পৌঁছে মরিচা ধরতে সহায়তা করছে।
গবেষকরা এ ধারণা পরীক্ষাগারে যাচাই করেছেন। লৌহসমৃদ্ধ খনিজে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন প্রবাহিত করা হলে তার কিছু অংশ হেমাটাইটে রূপ নেয়। আবার হাইড্রোজেন প্রবাহিত করলে হেমাটাইট আংশিকভাবে আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
এর আগে ২০২০ সালে ভারতের চন্দ্রযান–১ মিশনও চাঁদের মেরু অঞ্চলে হেমাটাইটের উপস্থিতি শনাক্ত করেছিল। বিজ্ঞানীদের মতে, চাঁদের মরিচা ধরা প্রক্রিয়া বোঝা গেলে ভবিষ্যৎ চন্দ্র মিশন, মহাকাশযানের নকশা ও সম্পদ ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
গবেষক দলের বক্তব্য অনুযায়ী, এ আবিষ্কার চাঁদে হেমাটাইটের বিস্তৃত উপস্থিতি এবং পৃথিবী-চাঁদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি উপাদান বিনিময়ের প্রমাণ দেয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল