► বৃক্ষপ্রেমী মোজাম্মেল খান ও জামিল খান। একজন ঠিকাদারির কাজ করেন, অন্যজন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। সময় পেলেই মোটরসাইকেল নিয়ে ছোটেন নগরের নানা প্রান্তে। সঙ্গে গাছের চারার ব্যাগ। গাছ লাগিয়ে পান অনাবিল আনন্দ...
► দুই বন্ধু গাছ ও পাখিপ্রেমী মানুষ। তাদের দেখে অন্যরাও গাছ লাগাতে উৎসাহিত হচ্ছেন...
কুমিল্লা নগরী। সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে এখানে ভবনগুলোর আকাশছোঁয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। কাটা পড়ছে গাছ। সবুজ পরিবেশ হয়ে উঠছে ধূসর। সেই পরিবেশকে স্নিগ্ধ সবুজ রাখতে কাজ করছেন দুই বন্ধু। কুমিল্লা নগরীর ধর্মসাগর দিঘিরপাড়ে, গোমতী নদী, তাল পুকুরপাড়, ঈদগাহ ও নিউ হোস্টেলের পাশে হাসছে তাদের লাগানো ফুল, ফল গাছ। বৃক্ষপ্রেমী মোজাম্মেল খান ও জামিল খান। একজন ঠিকাদারির কাজ করেন, আরেকজন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। সময় পেলে মোটরসাইকেল নিয়ে ছোটেন দুজনে। সঙ্গে থাকে গাছের চারার ব্যাগ। জানা যায়, একসময় ওয়াইল্ড ইনফো নামে একটা পরিবেশবাদী সংগঠন নিয়ে যাত্রা শুরু করেন জামিল খান। তার বাড়ির পাশের ধর্মসাগর পাড়ে লাগান নানা গাছ। আরেক বন্ধু মোজাম্মেল খান নিজের টাকায় গাছ কিনে মোটরসাইকেল নিয়ে দূর-দূরান্তের স্কুল কলেজ, বাজার, রাস্তার ধারে, মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তা রোপণ করতে থাকেন। চারদিকে সাড়া পড়ে যায়। গাছের জন্য আবদার আসতে থাকে তাদের কাছে। নিজের টাকায় গাছের চারা কিনে তা রোপণ করতে ছুটে যান মানুষের বাড়িতে। এভাবে মোজাম্মেল খান ও জামিল খানের লাগানো গাছে সবুজ হয়ে ওঠে প্রকৃতি। বিশেষ করে গোমতী পাড়ের রাস্তার পাশ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে মানুষের কাছে তারা হয়ে ওঠেন বৃক্ষপ্রেমী। মোজাম্মেল খান বলেন, ‘আনন্দ পাই তাই গাছ লাগাই। আমাদের সামর্থ্য সীমিত। গাছের চারা তৈরির পর বিতরণ করতে পারলে ভালো হতো।’ জামিল খান বলেন, ‘বেড়ে ওঠা গাছের পাশে দাঁড়ালে মনে আনন্দ পাই। কেউ গাছ নষ্ট করলে কষ্ট লাগে। নগরীতে ফলদ গাছের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এতে পাখির খাদ্যের জোগান হবে।’ সমাজকর্মী আহসান হাবিব বলেন, সরকারি ও সামাজিক সহায়তা পেলে মোজাম্মেল খান ও জামিল খানের মতো বৃক্ষপ্রেমীরা মানুষের জন্য আরও বেশি কাজ করতে পারবেন। তারা গড়ে তুলতে পারবেন মানুষ ও পশুপাখির জন্য সুন্দর পরিবেশ।
কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির পরিচালক ডা. আবু নাইম বলেন, ‘মোজাম্মেল খান, জামিল খান গাছ ও পাখিপ্রেমী মানুষ। তাদের মোটরসাইকেলে ঘুরে ঘুরে গাছ লাগাতে দেখেছি। তাদের দেখে অন্যরাও গাছ লাগাতে উৎসাহিত হচ্ছেন।’ কুমিল্লার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন, ‘নগরীতে মানুষের প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ নেই। সেখানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে যতটুকু জেনেছি মোজাম্মেল খান ও জামিল খানের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তাদের সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসতে পারে। যোগাযোগ করলে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তাদের গাছের চারা দিয়ে সহযোগিতা করব।’