সাম্প্রতিক সংঘাতে পাকিস্তানকে সমর্থন করার অভিযোগে ভারতজুড়ে তুরস্ক ও আজারবাইজানের পণ্য বয়কট চলছে। এরই অংশ হিসেবে দেশটির শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম মিন্ত্রা ও আজিও তুর্কি ব্র্যান্ডের পোশাক বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ফ্লিপকার্ট মালিকানাধীন মিন্ত্রা এবং রিলায়েন্স মালিকানাধীন আজিও তুর্কি ব্র্যান্ডের সব ধরনের পণ্য তাদের ওয়েবসাইটে বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। এগুলো মধ্যে রয়েছে- সর্বাধিক বিক্রিত নারীদের পশ্চিমা পোশাকের ব্র্যান্ড ট্রেন্ডিওল, কোটন, এলসি ওয়াইকিকি এবং মাভি প্রভৃতি।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে কয়েক দিনের সংঘর্ষে বহু বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানির পর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলেও কূটনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে অন্য মাত্রায়।
অভিযোগ উঠেছে, পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তুরস্ক ও আজারবাইজান। প্রতিবাদে ভারতজুড়ে তুরস্কের পণ্য বর্জনের ডাক দেয় অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স কনফেডারেশন ও রাজস্থানের মার্বেল ব্যবসায়ীরাও।
এরপর রাজস্থানের উদয়পুরে তুর্কি মার্বেল আমদানিতে দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আর মহারাষ্ট্রে বন্ধ করা হচ্ছে তুর্কি আপেলের বিক্রি।
ভারতের একজন ব্যবসায়ী বলেন, তুরস্ক আর আজারবাইজান ভারতের অর্থনীতির ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। এখন যদি তারা পাকিস্তানকে সমর্থন করে, তাহলে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের থেকে কোনও সহযোগিতা পাবে না।
অপর এক ব্যবসায়ীর বক্তব্য, তুরস্কের ভারতবিরোধী অবস্থানের কারণে আমাদের কমিউনিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশটিতে তৈরি কোনও পণ্য আর আমদানি করা হবে না।
তুর্কি পণ্যের বাজার হারানোর চিত্র মিলেছে মহারাষ্ট্রের পুনেতেও। আগে যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার কেজি তুর্কি আপেল বিক্রি হতো, এখন তার অর্ধেকও বিক্রি হচ্ছে না। আগে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ২ হাজার বাক্স বিক্রি হতো। এখন তার অর্ধেকও বিক্রি হচ্ছে না। প্রচুর স্টক জমে গেছে।
এমনকি তুরস্কের ডিসকভার দ্য পটেনশিয়াল প্রচারণাও থমকে গেছে ভারতীয় বাজারে। এটি তুরস্ক সরকারের একটি আন্তর্জাতিক প্রচার অভিযান। এর উদ্দেশ্য হলো তুরস্ককে একটি আকর্ষণীয় বাণিজ্যিক, বিনিয়োগযোগ্য ও পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা।
ভারতের বাজারে তুরস্ক ও আজারবাইজানের জন্য দরজা খুবদ্রুতই বন্ধ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কূটনৈতিক অবস্থান ব্যবসায়িক স্বার্থে পরিণত হওয়ায়, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলেও জানান তারা। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য ইকোনমিক টাইমস
বিডি প্রতিদিন/একেএ