ছন্দে নেই। সর্বশেষ ছয় ম্যাচে ৫০ রানের কোনো ইনিংস নেই। তারপরও লিটন দাসের ওপর আস্থা রেখেছে বিসিবি। স্ট্রোক খেলায় সিদ্ধ ড্যাসিং লিটনকেই টি-২০ ফরম্যাটের নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। তার নেতৃত্বে টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলবে টাইগাররা। তার নেতৃত্বে ২০২২ সালের পর ফের ‘মরুরাজ্য’ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ খেলতে গেছে বাংলাদেশ। আজ ও সোমবার ‘মরুশহর’ শারজাহতে ম্যাচ দুটি খেলবে লিটন বাহিনী। ম্যাচ দুটি মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়। আজকের ম্যাচ খেলেই দিল্লি ক্যাপিটালসের পক্ষে খেলতে শারজাহ ছাড়বেন মুস্তাফিজুর রহমান। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের পক্ষে খেলতে মুস্তাফিজকে অনাপত্তি ছাড়পত্র দিয়েছে বিসিবি।
শারজাহতে এবারই প্রথম আমিরাতের বিপক্ষে কোনো ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। যদিও মরুশহরটিতে এর আগে ওয়ানডে ও টি-২০ ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। কিন্তু আমিরাতের বিপক্ষে খেলেনি। না খেললেও ১৬ হাজার আসনবিশিষ্ট স্টেডিয়ামটির উইকেটের চরিত্র সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রয়েছে লিটন বাহিনীর। ২০২৪ সালের নভেম্বরে এখানে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেছিল টাইগাররা। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সিরিজ জেতার প্রত্যয়ে খেলবে লিটন বাহিনী। ঢাকা ছাড়ার আগে টাইগার অধিনায়ক নিজের ও দলের স্বপ্ন অনেক বড় বলে জানিয়েছিলেন। নিশ্চিত করেছিলেন আমিরাত সফরে সিরিজ জেতাই তার টার্গেট, ‘প্রত্যেকটা আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ই চায় পারফর্ম করতে। প্রত্যেকটা বাংলাদেশের অধিনায়কই চায় দল জিতুক। আমিও ব্যতিক্রম কিছু নই। আমি চাই আমার হাত ধরেই বড় কিছু হোক। আমার অধিনায়কত্বে আমরা সিরিজ জিততে পারি, লক্ষ্য একটাই।’
লিটন এই প্রথম নেতৃত্ব দিচ্ছেন না টাইগারদের। টি-২০ ছাড়া টেস্ট, ওয়ানডেতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিল। ওয়ানডেতে ৫ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। টি-২০ ক্রিকেটে ৪ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন তিনটি। হেরেছেন একটি। ২০২১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হঠাৎ দায়িত্ব পেলেও সাফল্য পাননি। গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নেতৃত্ব পান আবারও। নাজমুল হোসেন শান্তর ইনজুরিতে দায়িত্ব নিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ ব্যবধানে হোইয়াটওয়াশ করেন। তখন তিনি টি-২০ ফরম্যাটে পূর্ণ মেয়াদে অধিনায়ক হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। যদিও সিরিজটিতে তার রান ছিল সাকল্যে ১৭। তারপরও আস্থা রেখেছে বিসিবি।
অধিনায়ক লিটন কি পারবেন এবার আমিরাতের বিপক্ষে টি-২০ ম্যাচে টস জিততে? এর আগে দলটির বিপক্ষে তিনটি টি-২০ ম্যাচ খেলেও টস জিতেনি। সবগুলো ম্যাচ জিতেছে আগে ব্যাটিং করে। ২০ ওভারের ফরম্যাটে দুই দল প্রথম মুখোমুখি হয় ২০১৬ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে। মিরপুরের ম্যাচটি টাইগাররা জয় পায় ৫১ রানে। ২০২২ সালে দুই দল প্রথমবার টি-২০ দুই ম্যাচের সিরিজ খেলে। হোয়াইটওয়াশ করে আমিরাতকে। টাইগাররা ম্যাচ দুটি জিতেছিল যথাক্রমে ৭ ও ৩২ রানে। দুবাইয়ে ম্যাচ দুটি খেললেও শারজাহতে টি-২০ ও ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে লিটনদের।
১৯৯০ সালে শারজাহতে প্রথমবার ওয়ানডে খেলেছিল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলেশিয়া কাপে সেবার দুটি ম্যাচ খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর সব মিলিয়ে ৮টি ওয়ানডে খেলেছে মরুশহরটিতে। জয় একমাত্র আফগানিস্তানের বিপক্ষে। টি-২০ খেলেছে তিনটি। ২০২২ সালে শারজাহতে সর্বশেষ টি-২০ ম্যাচ খেলেছিল টাইগাররা। এশিয়া কাপের ওই ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিল ৭ উইকেটে। ২০২১ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচ খেলেছিল এখানে। শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হেরেছিল। এবার সুযোগ এসেছে ব্যর্থতার খোলস ভেঙে আমিরাতের বিপক্ষে সাফল্যে উদ্ভাসিত হতে।