বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের প্রথম দুই ওয়ানডে রোমাঞ্চ ছড়ায় শেষ ওভার পর্যন্ত। দুই ম্যাচের চার ইনিংসেই ৩০০-এর বেশি রান হয়েছে। যেখানে প্রথম ম্যাচে জয় পায় বাংলাদেশ আর দক্ষিণ আফ্রিকা জেতে দ্বিতীয় ওয়ানডে। তবে রাজশাহীতে আজ তৃতীয় ওয়ানডেতে স্কোরবোর্ডে তেমন রান ওঠেনি।
জিতলেই সিরিজ—রাজশাহীতে আজ তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সমীকরণ ছিল এমনই। সিরিজ নির্ধারণী এই ম্যাচেই বাংলাদেশ করেছে ২২৫ রান। বর্তমানের ধুমধাড়াক্কা ওয়ানডে ক্রিকেটে এটা মামুলি স্কোর বলা যায়। তবে বাংলাদেশের বোলাররা এই স্কোরটাকেই কঠিন বানিয়ে ফেলল প্রোটিয়াদের জন্য। ৩৪ রানে জিতে সিরিজ জিতে নিল আকবর আলীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার এনকোবানি হ্যান্ডসাম মোকোয়েনা রানআউট হতেই শুরু বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের উদযাপন।
২২৬ রানের লক্ষ্য হলেও দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। ২১.২ ওভারে ৭ উইকেটে ৯৪ রানে পরিণত হয় সফরকারীরা। দক্ষিণ আফ্রিকা কত দ্রুত অলআউট হয় সেটাই ছিল দেখার অপেক্ষা। ৯ নম্বরে নামা মোকোয়েনা ও মিডল অর্ডার ব্যাটার তিয়ান মাইকেল ফন ফুরেন দলের বিপর্যয়ে হাল ধরেন। অষ্টম উইকেটে তারা (মোকোয়েনা-ফুরেন) গড়েন ৫৪ রানের জুটি। তাদের সাবলীল ব্যাটিংয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান শেখ পারভেজ জীবন। ৩০তম ওভারের শেষ বলে ফুরেনকে কট এন্ড বোল্ড করে জুটি ভাঙেন জীবন। ৩৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রান করেন ফুরেন।
৩০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ উইকেটে ১৪৮ রানে পরিণত হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নামেন সেপো ইনোসেন্ট এনটুলি। নবম উইকেটে মোকোয়েনা-এনটুলি গড়েন ৪২ রানের জুটি। এই জুটি ভাঙার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল অনেকবার। কখনোবা বল একটুর জন্য স্টাম্প স্পর্শ করেনি। আবার কখনো বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ঠিক মতো সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেননি। ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে এনটুলিকে এলবিডব্লিউ করে জুটি ভাঙেন রাকিবুল।
এনটুলি ফেরার পর দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার হয় ৭৭ বলে ৩৬ রান। হাতে তখন ১ উইকেট। প্রোটিয়াদের সামান্যতম সুযোগটুকু আর দেয়নি বাংলাদেশ।মোকোয়েনার রানআউটে ৩৮.২ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায়। বাংলাদেশের রাকিবুল ১০ ওভারে ২৬ রান খরচ করে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ২ ওভার মেডেন দিয়েছেন। মাহফুজুর রহমান রাব্বি, ওয়াসি সিদ্দিকী পেয়েছেন দুটি করে উইকেট। জীবন নিয়েছেন এক উইকেট। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে রাকিব পেয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার।
সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক জর্জ মার্থিনাস ফন হার্দিন। প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ রীতিমতো চোখে সর্ষেফুল দেখতে থাকে। ৩১.২ ওভারে ৮ উইকেটে ১১৮ রানে পরিণত হয় দলটি। এমন অবস্থায় স্কোরবোর্ডে ২০০ রান জমা করাই যখন দূরের পথ, তখন হাল ধরেন রাকিবুল ও রাব্বি। নবম উইকেটে তাঁরা গড়েন ৮৪ রানের জুটি গড়েন।৪০ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪২ রান করেন রাকিবুল।
নবম উইকেটের জুটিতেই বাংলাদেশ ২০০ পেরোয়। ৪৫.৫ ওভারে ২২৫ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকেরা। ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন রাব্বি। ৭৭ বলের ইনিংসে ৫ চার ও ৩ ছক্কা মেরেছেন তিনি। বাংলাদেশের শেষ ব্যাটার হিসেবে তিনিই আউট হয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সেসোনা সেপো এনদোয়ান্দা নিয়েছেন ৩ উইকেট। ফুরেন পেয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোকোয়েনা, দিয়ান ফরেস্টে, রোমাসান সোমা পিল্লে ও এনটুলি। যাদের মধ্যে এনটুলি ১০ ওভারে খরচ করেন ৩০ রান। তিন ওভার মেডেন দিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ