পথের ধারে জন্মানো গুল্ম বিষকাঁটালি অঞ্চলভেদে বিসাতু, এগরা, মইছা, আগরা নামে পরিচিত। ঔষধি গুণে ভরপুর এ গাছটি ক্যানসার থেকে শুরু করে আলসার ও ব্যথা সারাতে কার্যকর। তবে এখন আর আগের মতো দেখা মেলে না গাছটির, কমে গেছে এর ব্যবহারও। প্রজাতিভেদে দুই ধরনের বিষকাঁটালি গাছ দেখা যায়। একটির ফুল গোলাপি, অন্যটির সাদা। গাছটি পিঁপড়া এবং শামুক তাড়াতে বেশ কার্যকর। ব্যথা সারাতে বিষকাঁটালির বীজ মহৌষধ। বীজ ব্যবহার করে টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মা নিরাময় করা যায়। ভিমরুলের কামড়ে বিষের জ্বালা কমাতে বিষকাঁটালির পাতার রস ব্যবহার করা হয়। বিষকাঁটালি কৃমি, জীবাণু, ঘা, আলসার ও ব্যথানাশক। ক্যানসার ও চামড়ার চিকিৎসায়ও এর ব্যবহার করা হয়। তবে বিষাক্ত হওয়ায় এ গুল্ম খেয়ে গবাদি পশু মারা যেতে পারে। একসময় গ্রামবাংলায় ভেষজ ওষুধ তৈরিতে এ গুল্ম ব্যবহার করা হতো। এখনো অনেকে এ চর্চা অব্যাহত রেখেছেন। গাছটির ডাল-পাতা মাছ ধরার টোপ, কেঁচো সংগ্রহ, পোকামাকড় থেকে গৃহস্থালি পণ্য সুরক্ষাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হতো। এখন এসব কাজের বিকল্প হিসেবে কেমিক্যাল ব্যবহার হচ্ছে। অটোরিকশাচালক সোলায়মান আলী জানান, বাড়ির আঙিনায়, ঝোপঝাড়, খেতখামারে বিনা চাষে জন্মাত বিষকাঁটালি গাছ। আঙুলে শিং মাছের কাঁটা বিঁধলে শরীরে বিষকাঁটালির পাতা বেঁধে রাখলে অল্প সময়ের মধ্যে যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এখন খুব একটা দেখা যায় না গাছটি।
বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, পোকার কবল থেকে ধান, গমসহ ফসল সুরক্ষায় গোলায় রাখা হয় বিষকাঁটালির পাতা। শরীরের খোসপাঁচড়া, ফোঁড়ার চিকিৎসায় এর পাতা বেটে লাগিয়ে দিলে দ্রুত ক্ষত শুকিয়ে যায়। এ ছাড়া এর পাতা দুই-তিন দিন পানিতে ভিজিয়ে সে পানি সবজি খেতে প্রয়োগ করলে পোকামাকড় দূর হয়। বিষকাঁটালি গাছ ও এর ব্যবহার ক্রমে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।