আজ ১৭ মে, বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য, ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন ও দীর্ঘজীবী হোন’। এর তথ্য উপাত্ত জেনে সচেতনতা তৈরি দরকার সবার।
হাইপারটেনশন কী:
যদি কারো ধমনীর রক্তচাপ সবসময় ১৪০/৯০ মি. মি পারদ এর বেশি থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির হাইপারটেশন আছে বলে গণ্য করা হয়।
রক্তচাপ মাপার সঠিক নিয়ম:
১. রক্তচাপ মাপার ৩০ মিনিট আগে থেকে কিছু খাওয়া বা পান করা যাবে না।
২. প্রস্রাবের চাপ থাকলে অব্যশই প্রস্রাব করার পর রক্তচাপ মাপতে হবে।
৩. চেয়ারের পেছন দিকে হেলান দিয়ে ৫ মিনিট বসার পর রক্তচাপ মাপতে হবে।
৪. রক্তচাপ মাপার সময় দুই পা মেঝেতে রেখে বসতে হবে।
৫. হাত টেবিলের উপর রাখতে হবে যাতে করে বাহু বুক বরাবর থাকে।
৬. রক্তচাপ মাপার মেশিনের CUFF (কাফ) টি উন্মুক্ত বাহুতে (অর্থাৎ কোন কাপড়ের উপর নয়) হালকাভাবে বাঁধতে হবে।
৭. রক্তচাপ মাপার সময় কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
উচ্চ রক্তচাপ এর লক্ষণ:
সকল হাইপারটেনশন রোগীদের লক্ষণ থাকে না এবং হাইপারটেনশনের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণও নেই। তবে সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়:
১. মাথা ঘুরানো ও মাথা ব্যথা।
২. ঘাড় ব্যথা
৩. অস্থির লাগা
৪. বমি বমি ভাব।
৫. ঘুমের সমস্যা।
যে সকল রোগীদের কোনো লক্ষণ থাকে না তাদের উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় ধরা পড়ে না এবং তারা কোনো ওষুধও গ্রহণ করে না। এরা অনেক সময় জরুরি অবস্থা যেমন: স্ট্রোক, হার্ট-অ্যাটাক, হার্টফেল অবস্থায় হাসপাতালে আসেন এবং অনেক সময় বাঁচানো সম্ভব হয় না। তাই হাইপারটেনশনকে নিরব ঘাতক বলা হয়।
করণীয়:
১. আলাদা লবণ খাওয়া কমাতে হবে, রান্নায়ও কম লবণ দিতে হবে।
২. ধূমপান পরিহার করতে হবে।
৩. চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করে শাকসবজি ফল বেশি করে খেতে হবে।
৪. ব্যয়াম ,শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে অথবা প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, বিশেষ করে মেদভুঁড়ি যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৬. চিন্তা মুক্ত থাকার অভ্যস করতে হবে।
৭. নিয়মিত ৬-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
হাইপারটেনশনের ওষুধ:
উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়লে ফার্মেসি থেকে নিয়ে যেকোনো প্রেশারের ওষুধ খাওয়া ঠিক না। বাজারে অনেক ধরণের ওষুধ পাওয়া যায় কিন্তু শরীরে অন্য কোনো রোগ থাকা সাপেক্ষে প্রত্যেক রোগীর জন্য কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ রয়েছে। রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তি তার শরীরের সাথে মানানসই ওষুধ সেবন করা উচিত। ভয়োপেটিন, হার্ট বা কিডনির রোগ থাকলে সেই ওষুধগুলোও নিয়মিত সেবন করতে হবে।
লেখক: ডা. যতীন্দ্র নাথ সাহা, কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজি, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড,
মিরপুর-১০ ঢাকা। হটলাইন: ১০৬৭২
বিডি প্রতিদিন/নাজিম