শৈশব থেকেই ডুবে যাওয়া জাহাজের প্রতি ছিল তার অদম্য টান। এবার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিল। ৫৩ বছর বয়সী অভিজ্ঞ ডুবুরি ডম রবিনসন মাত্র ৩০০ পাউন্ডে (বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৫০ হাজার) কিনে নিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ।
ব্রিটেনের কর্নওয়াল উপকূলে ডডম্যান পয়েন্টের কাছে সমুদ্রের তলায় পড়ে থাকা ৩,০০০ টন ওজনের এসএস আলমন্ড ব্রাঞ্চ নামের কার্গো জাহাজটি ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে বিক্রির জন্য তোলা হয়েছিল। সেখানেই চোখে পড়ে ডম রবিনসনের। আর দেরি না করে তিনি মালিকের সাথে যোগাযোগ করে ক্রয়ের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
এসএস আলমন্ড ব্রাঞ্চ প্রায় ১০০ মিটার দীর্ঘ। ১৯৭০-এর দশকে কেউ একজন ভেবেছিলেন, জাহাজটির মধ্যে হয়তো মূল্যবান কিছু লুকিয়ে আছে। কিন্তু বাস্তবে এটি পরিণত হয়েছিল জং ধরা লোহার স্তুপে। ডম রবিনসন জানান, কেনার আগে তিনি আবারও ডুব দিয়ে ধ্বংসাবশেষ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। ‘গিয়ে জাহাজটা ঘুরে দেখলাম, নিজের মতো যাচাই করলাম, জানতাম কী কিনছি,’ বলেন তিনি।
ডম রবিনসন জানান, ধ্বংসাবশেষের ওপর মালিকানা থাকায় সেখানে ডুব দেওয়ার অভিজ্ঞতাও এবার হবে ভিন্নরকম। তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে যেন আমার নিজের কিছু একটায় ডুব দিচ্ছি। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ডুবুরি হিসেবে কাজ করা ডমের ইউটিউবে ৯,০০০-এরও বেশি অনুসারী রয়েছে।
তবে এই জাহাজ থেকে অর্থ আশা করছেন না তিনি। বরং তার বড় আশা, জাহাজের ঘণ্টাটি খুঁজে বের করা।
যুক্তরাজ্যের উপকূল জুড়ে ছড়িয়ে আছে হাজারো জাহাজ ও উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ। রিসিভার অব রেকের নিয়ম অনুযায়ী, এগুলোর মালিকরা তাদের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারেন। তবে কোনো ধ্বংসাবশেষ থেকে কিছু উদ্ধার করা হলে ২৮ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে হয়। ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব বা সাংস্কৃতিক গুরুত্বসম্পন্ন ধ্বংসাবশেষের ওপর ডুবুরিদের প্রবেশ অধিকারে কড়াকড়ি রয়েছে।
১৯১৭ সালে মেভাগিসি উপকূলে একটি জার্মান সাবমেরিনের টর্পেডো আঘাতে ডুবে গিয়েছিল এসএস আলমন্ড ব্রাঞ্চ। শত বছর পেরিয়ে গেলেও, আজও সমুদ্রের নীল গহ্বরে ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে পড়ে আছে এই ধ্বংসাবশেষ।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল