গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে আমরা চাই ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে, একটা নায্যতার সম্পর্ক হবে। গোলামীর সম্পর্ক হবে না। গত ১৬ বছরে আমার দেশের মানুষ সীমান্তে ভারতের গুলিতে মরে আওয়ামী লীগ কোন প্রতিবাদ করে নাই। মোদি সরকারের মন্ত্রীরা নির্লজ্জ বেহায়ার মতো বলেছে- বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক। এই নির্লজ্জ বেহায়রা জনগণের প্রতিরোধের মুখে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এখন ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। অনেকে নাম পরিবর্তন করেছে। মুসলমান নাম পরিবর্তন করে হিন্দু নাম নিয়েছে বাঁচার জন্য। তারমানে এটা প্রমাণিত আওয়ামী লীগ ভারতের একটা এক্সটেনশন।
আজ শনিবার দুপুরে চৌরঙ্গী মোড়ের মুক্ত মঞ্চে গণঅধিকার পরিষদ পঞ্চগড় শাখা আয়োজিত গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ভারতের দাস, গোলামী করা দল। এই জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শুধুমাত্র আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেনি এদেশের জনগণ এবং বীর ছাত্র জনতা, এই দেশে ভারতীয় আগ্রাসন এবং আধিপত্যবাদকেও উচ্ছেদ করেছে এই আওয়ামী লীগের পতনের মাধ্যমে। কাজেই এইখানে আমাদের অবস্থান পরিস্কার ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঠিকানা হবে না। পৃথিবীর ইতিহাসে এই ধরনের জঘন্য এবং বর্বরতার পরে রাজনৈতিক দল রাজনীতি করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের কোন আপোস হবে না।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে প্রত্যেক আন্দোলন সংগ্রামে সাধারণ শ্রমিক-কৃষক-সাধারণ জনতা লড়াই সংগ্রাম করেছে। কিন্তু তার ফল ভোগ করেছে এই দেশের ভাওতাবাজ ভণ্ড রাজনীতিবীদরা উঁচুতলার মানুষেরা। তাই আমরা বলতে চাই ভণ্ড রাজনীতিবীদদের পেছনে ঘুরে দেশে সমাজের ক্ষতি করা যাবে না। ভবিষ্যৎ নষ্ট করা যাবে না। এখন সময় এসেছে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর। এই সমাজকে পরিবর্তনের জন্য এই সাধারণ ছাত্র-জনতা বীর জনতাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। সে কারণেই আমরা বলছি আওয়ামী লীগের আমলে সেই লুটপাট এবং দখলদারী চাঁদাবাজি মাফিয়াদের রাজনীতি চলেছে পরিস্কার কথা বলতে গেলে শুধুমাত্র পঞ্চগড় নয় সারা বাংলাদেশে এই গণঅভ্যুত্থানের পরেও কিন্তু তার পরিবর্তন হয়নি।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা খোঁজ নেন ট্রাক স্ট্যান্ড থেকে, টেম্পু স্ট্যান্ড থেকে, বাসস্ট্যান্ড থেকে আগে যেভাবে চাঁদা তুলতো এখনো চাঁদা তোলা বন্ধ হয়ে কিনা? কাঁচা বাজার, সবজি বাজার, সমিতি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, মিল, ফ্যাক্টরি আওয়ামী লীগ তো পালিয়ে গেছে এখনো চাঁদাবাজি লুটপাট বন্ধ হয়েছে কিনা? হয় নাই।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে ভুলে গেলে চলবে না রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাবাদী, ভাওতাবাজির কারণে গত ষোল বছরে তাদের ডাকে কোন লোক রাস্তায় নামেনি। তাদের ডাকে জনগণ আন্দোলন সংগ্রাম করেনি। ছাত্র-জনতা তরুণদের বিশ্বাস করে বাংলাদেশকে নতুনভাবে বিনির্মাণ করার জন্যই বুক পেতে বুক চেপে লড়াই করেছে। এইখানে এক ভাই বলেছে তেঁতুলিয়ায় পাথর তুলতেও নাকি শ্রমিকদের চাঁদা দিতে হয়। তাহলে এই চাঁদা কারা তুলছে। চাঁদাবাজদের কে তো আমরা বুকের রক্ত দিয়ে হটিয়েছি। দখলদারদের তো আমরা জীবন দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছি। তাহলে এখন চাঁদাবাজ দখলদার কারা? আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলতে চাই আপনাদের স্বভাব চরিত্র আওয়ামী লীগের মতো হয় জনগণ কিন্তু ভোটের মাঠে তার জবাব দেবে।
পঞ্চগড় শাখার সভাপতি মাহাফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে দলটির মুখপাত্র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূূর আসাদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, জাগপার পঞ্চগড় শখার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রহমান বিপ্লব, বাংলাদেশ জাসদের পঞ্চগড় শাখার সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল, গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক সাজেদুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পঞ্চগড় জেলার নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
এসময় আগামী সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে মাহাফুজুর রহমানকে পরিচয় করিয়ে দেন নুরুল হক নুর।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত