চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে নির্মাণ করা হয়েছে ইলা মিত্র সংগ্রহশালা। সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ এবং পরে পাকিস্তানী সামরিক শোষনের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে প্রথম প্রতিবাদ ছিল ঐতিহাসিক সেই সাঁওতাল কৃষক বিদ্রোহ। ইতিহাসের পাতায় সেই ঘটনা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে কোনো ম্মৃতিচিহ্ন ছিল না এতদিন। ৮০ বছর পর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের ভূমিতে গড়ে উঠেছে বিশেষ এ সংগ্রহশালা। যেখান থেকে তরুণ প্রজন্ম জানতে পারবে ইলা মিত্রের বিপ্লবী ভূমিকার ইতিহাস।
জানা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি বাড়ি, যার নাম দেয়া হয়েছে ইলা মিত্র সংগ্রহশালা। যিনি নাচোলের রানী হিসেবে বেশি পরিচিত। নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের এই গ্রামেই ছিল পূর্ব বাংলার তে-ভাগা আন্দোলনের সুতিকাগার।
১৯৪৬ সালে কৃষক ও সাঁওতালদের সংগঠিত করে জোতদার শোষকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুরের বধু ইলা মিত্র। ফসলের তিন ভাগের দুইভাগ শাষক শ্রেণিকে দিতে অস্বীকৃতি জানায় বাংলার চাষিরা। জমিদারি দমন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত নেতৃত্ব দেন ইলা মিত্র। এজন্য তাঁকে সইতে হয় অমানুষিক অত্যাচার। দেশ ভাগের পর কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ করা হয়। আত্মগোপনে চলে যান আন্দোলনের অন্যতম এই নারী নেত্রী। নীপিড়িত চাষিদের অধিকার আদায়ের স্মৃতি ধরে রাখতে অবশেষে নাচোলের তপ্ত ভূমিতে গড়ে তোলা হয়েছে তে-ভাগা আন্দোলন সংগ্রহশালা যা ইলা মিত্র সংগ্রহশালা নামে পরিচিত। এখানে ইলামিত্রের দুর্লভ ছবি ছাড়াও তার কিছু বই স্থান পেয়েছে।
উল্লেখ্য, এক সময় এই স্থানটি ছিল জঙ্গলাকীর্ণ ডোবা-পুকুর। দখলমুক্ত করার পর ২৬ শতাংশ জমির উপর ৮’শ বর্গফুট আয়তনের দোতালা বাড়িটি নির্মাণ করা হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। স্থানীয় প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠছে ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের ইতিহাসের এই বাতিঘর। এতে আদিবাসীসহ স্থানীয়রা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল