রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। তারা হলেন- নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ওরফে সোহেল রানা, শেরপুরের নালিতাবাড়ীর বাসিন্দা আল মামুন, চট্টগ্রামের খুলশীর বাসিন্দা ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী তানিয়া। গত শুক্রবার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জব্দ হওয়া ইয়াবার আনুমানিক মূল্য ৫ কোটি টাকা। এটাই ঢাকা মহানগর এলাকায় জব্দ হওয়া ইয়াবার সবচেয়ে বড় চালান। ইয়াবা ছাড়াও বিলাসবহুল একটি ব্রান্ড নিউ গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫-৪৫৫০) জব্দ করা হয়েছে। গতকাল এসব তথ্য জানান ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম শওকত ইসলাম।
এ বিষয়ে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পরিচালক শওকত বলেন, প্রায় ৩ মাস আগে ডিএনসি ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন- একটি সংঘবদ্ধ মাদক কারবারি চক্র বায়িং হাউস এবং আবাসন ব্যবসার আড়ালে টেকনাফ থেকে বিলাসবহুল গাড়িতে ইয়াবার বড় বড় চালান এনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারি মাদক কারবারিদের সরবরাহ করে। তখন থেকেই অধিদপ্তর তাদের ওপর কড়া নজরদারি শুরু করে। তিন মাসেও তাদের ধরা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ সপ্তাহখানেক আগে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, এ চক্রটি আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাচারের উদ্যোগ নিয়েছে। তারা টেকনাফের একটি রিসোর্টে দীর্ঘ সময় ধরে হুন্দাই কোম্পানির বিলাসবহুল গাড়ির পাদানির নিচের প্যানেলে বিশেষ কৌশলে ১ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ঢুকিয়ে প্যানেলটি সুনিপুণভাবে ঝালাই করে রাখেন। সর্বশেষ সংবাদের ভিত্তিতে অধিদপ্তরের একটি দল শুক্রবার রাতে হাতিরঝিলে অভিযান চালায়। অভিযানে আসামিদের গাড়িটি ৭ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ধাওয়া করে আটক করা হয়। গাড়িটি আটকের পর প্যানেলের ঝালাই করা অংশটি খুলে জব্দকৃত ইয়াবাগুলো পাওয়া যায়। ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহমেদ জানান, এ চক্রটি এতদিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি এড়ানোর জন্য বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে বড় বড় ইয়াবার চালান ঢাকায় সরবরাহ ও বিক্রি করে আসছিল। চক্রটি বায়িং হাউস ও আবাসন ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করত।
তাদের অবৈধ উপার্জিত অর্থ মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে খাটানো হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডিএনসির রমনা সার্কেলের পরিদর্শক লোকমান হোসেন বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।