দীর্ঘ ৫ বছর ধরে আটকে রাখা মরিয়ম বিবি (৬৫) নামের এক গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার বিকেলে শহরের অনাথের মোড় এলাকায় অবস্থিত গনি ভবনের তৃতীয় তলার জনৈক আব্দুল কাদেরের ফ্ল্যাট থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত গৃহকর্মী মরিয়ম বিবিকে কোতয়ালী থানায় রাখা হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানায় পুলিশ।
থানা পুলিশ ও মরিয়ম বিবির পরিবার সূত্রে জানা যায়, শহরের আলীপুর মহল্লার মৃত রহিম উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম বিবি ২০০০ সালে ঝিলটুলীর অনাথের মোড় এলাকার সিঙ্গাপুর প্রবাসী আব্দুল কাদেরের ফ্ল্যাটে গৃহকর্মী হিসাবে কাজে যোগদান করে। কয়েকমাস পর গৃহকর্মী মরিয়মের একমাত্র ছেলে আব্দুল মতিন তার মাকে আনতে গেলে বাড়ির মালিকের স্ত্রী লিবা বেগম তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি এবং তার মায়ের সাথে কোন কথা বলতে দেয়নি। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় আব্দুল মতিন তার মায়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করা হয়। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন জনের কাছে ধর্না দিয়েও আব্দুল মতিন তার মাকে সেই বাসা থেকে আনতে পারেননি। সম্প্রতি ফ্লাট মালিকের স্ত্রী লিবা বেগম দেশের বাইরে থাকায় আইনের আশ্রয় নেন আব্দুল মতিন। তিনি তার মাকে উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা করেন। আদালত কোতয়ালী থানা পুলিশকে মরিয়ম বিবিকে উদ্ধার করতে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশনা পেয়ে রবিবার বিকেলে কোতয়ালী থানা পুলিশ আব্দুল কাদেরের ফ্ল্যাট থেকে মরিয়ম বিবিকে উদ্ধার করে। এসময় আব্দুল কাদের ও তার স্ত্রী লিবা বেগম বাসায় ছিলেন না। সেসময় এ দম্পত্তির চার মেয়ে বাসায় ছিলেন।
মরিয়ম বিবির ছেলে আব্দুল মতিন অভিযোগ করে বলেন, তার মাকে দীর্ঘদিন ফ্ল্যাটে আটকে রেখে মানসিক ও শারিরীকভাবে নির্যাতন করেছে লিবা বেগম ও তার মেয়েরা। ফলে তার মা অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়ে।
মরিয়ম বিবি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করা হতো। আটকে রেখে তার উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হতো। ছেলের কাছে যেতে চাইলে তাকে হাত-পা কেটে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়া হতো। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার চান মরিয়ম বিবি।
কোতয়ালী থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশনা পেয়ে ভিকটিম মরিয়ম বিবিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
