ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের আলোচনায় স্থবিরতা এবং দেশটির নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জর্জিয়ার রাজধানী তিবলিসিতে। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাদের। রবিবার এই খবর জানিয়েছে বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
জর্জিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে আসে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া হাজার হাজার মানুষ। বিরোধী প্রধান দলগুলো স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান না মেনে নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনকে তীব্র করেছে। বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক ও অপেরা কণ্ঠশিল্পী পাতা বুড়চুলাদজে আগে থেকেই শাসক দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে গিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ সরাসরি হস্তক্ষেপ করে— দাঙ্গা পুলিশ পিপার স্প্রে নিক্ষেপ করে এবং জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে। পরে পুলিশের হাতে অনেক বিক্ষোভকারী আটক হয়।
গত বছরের পার্লামেন্ট নির্বাচনে শাসক দল ‘জর্জিয়ান ড্রিম’ বিজয় দাবি করার পর থেকে দেশটি রাজনৈতিকভাবে অচলাবস্থায় রয়েছে। ইইউপন্থি বিরোধী দলগুলো বারবার অভিযোগ তুলছে নির্বাচনে কারচুপি করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে শাসকদল। এ অভিযোগের জেরে সরকারের সঙ্গে ইইউ-তে যোগদানের আলোচনা আপাতত স্থগিত রয়েছে। বিক্ষোভের সময় পাতা বুড়চুলাদজে এক বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তারা যেন অবিলম্বে জর্জিয়ান ড্রিম দলের ছয়জন শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করেন।’
এর আগেও কয়েক মাস ধাপে ধাপে সরকারবিরোধী কর্মী, স্বাধীন গণমাধ্যম ও পশ্চিমাপন্থি রাজনৈতিক নেতাদের ওপর জোরালো দমননীতি চালানো হয়েছে। দেশটির অনেক বিরোধী নেতা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তিবলিসিতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২১ বছর বয়সী ইয়া নামের এক কিশোরী বলেন, ‘রঙিন কিছু পরলে সহজেই আমাদের চেনা যাবে, আর চেনা গেলে জেলে যেতে হবে।’ তাই কালো পোশাক, হেলমেট ও গ্যাসমাস্ক পরে বিক্ষোভে ছিলেন তিনি। ইয়া জানান, রুস্তাভেলি এভিনিউতে বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংযুক্ত নজরদারি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
দেশটির সরকার জানিয়েছে, রাস্তা অবরোধের মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের অপরাধে ৫ হাজার জর্জিয়ান লারি (১ হাজার ৮৩৫ মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হয়েছে শত শত বিক্ষোভকারীকে।
বিডি প্রতিদিন/এএম