বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের কাছ থেকে কোটি টাকার বেশি প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর প্রাক্তন ব্যক্তিগত সহকারী বেদিকা প্রকাশ শেঠি। মুম্বাইয়ের জুহু থানার পুলিশ জানিয়েছে, আলিয়ার ব্যক্তিগত ও প্রযোজনা সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে দীর্ঘ সময় ধরে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেন বেদিকা।
অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২২ সালের মে মাস থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে বেদিকা আলিয়ার অ্যাকাউন্ট ও তাঁর প্রোডাকশন হাউস ‘ইটারনাল সানশাইন প্রোডাকশনস’-এর অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ৭৬,৯০,৮৯২ টাকা সরিয়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি, যখন আলিয়ার মা সোনি রাজদান জুহু থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্তে উঠে এসেছে, বেদিকা আলিয়াকে ভুল বুঝিয়ে একাধিক জাল বিল পেশ করতেন, যেগুলো অভিনেত্রীর ভ্রমণ বা ব্যক্তিগত খরচ বলে দেখানো হতো। আলিয়ার স্বাক্ষর নেওয়ার পর, সেই বিলের ভিত্তিতে তিনি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতেন। পরে সেই অর্থ দিয়ে নিজস্ব পেশাদার সরঞ্জাম কেনাসহ বিভিন্ন খাতে খরচ করেন এবং বাকি টাকা নিজের ও বন্ধুদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণার অর্থ আত্মসাতের সময় আলিয়ার আর্থিক নথিপত্র, চেক ও ট্রানজ্যাকশনের দায়িত্ব ছিল বেদিকার কাছেই। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাসভঙ্গের এই প্রক্রিয়া চলছিল অভিনেত্রী ও তাঁর পরিবারের চোখে না পড়েই।
অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই বেদিকা গা-ঢাকা দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে তিনি রাজস্থান, পরে কর্নাটক, পুনে ও বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান পরিবর্তন করেন। অবশেষে বেঙ্গালুরুতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে জুহু থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে মুম্বই আনা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ এবং জালিয়াতির ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত আলিয়া ভাট কিংবা তাঁর প্রোডাকশন হাউসের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে বলিউড অঙ্গনে এই ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে এমন একজন কাছের সহকারীর দ্বারা এত বড় আর্থিক প্রতারণার ঘটনা সামনে আসায়।
আলিয়া ভাট ২০২১ সালে ‘ইটারনাল সানশাইন প্রোডাকশনস’ প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু থেকেই বেদিকা তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। সেই আস্থার সুযোগ নিয়েই ঘটে এ প্রতারণা।
বিডি প্রতিদিন/মুসা