আগস্ট মানবসভ্যতার জন্য এক কলঙ্কিত মাস। পাশাপাশি দুনিয়াজুড়ে নানা অর্জনের মাসও এটি। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মাস। ১৯৪৫ সালে আগস্টের ৬ ও ৯ তারিখে আমেরিকান যুদ্ধবিমান জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে। যে বোমার আঘাতে নিমেষেই প্রাণ হারায় লাখো মানুষ। ধ্বংস হয় হাজার হাজার ঘরবাড়ি-স্থাপনা। শ্মশানে পরিণত হয় সমৃদ্ধ দুই নগরী। আণবিক বোমা বিস্ফোরণে যারা বেঁচে যান তাদের কাছে মৃতরাও ঈর্ষার পাত্র হয়ে দাঁড়ান। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় অসহনীয় কষ্টের মধ্যে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া যেন ছিল তাদের জন্য ঢের ভালো। আমেরিকার যুক্তি, জাপানকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করার জন্য পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ইতিহাস বলে, সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ার কাছে জার্মানির আত্মসমর্পণের পর, জাপানের আত্মসমর্পণ ছিল সময়ের ব্যাপার। জাপানের দিকে ধেয়ে আসছিল সোভিয়েত বাহিনী। তাদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতেই আমেরিকা পারমাণবিক হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। উদ্দেশ্য ছিল এক ঢিলে দুই পাখি মারা। প্রথমত জাপানকে আমেরিকার কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। দ্বিতীয়ত সোভিয়েত ইউনিয়নকে নিজেদের শক্তিসামর্থ্য সম্পর্কে বুঝিয়ে দেওয়া।
আগস্ট অবশ্য আমাদের এই উপমহাদেশের জন্য নতুন সূর্যোদয়ের মাস। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দুই বছরের মধ্যে ১৯৪৭ সালের মধ্য আগস্টে সাম্প্রদায়িক বিবেচনায় ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে ভারত ও পাকিস্তান নামে। আজকের বাংলাদেশ ছিল সে সময় পাকিস্তানের পূর্বাংশ। আয়তনে পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে পূর্ব পাকিস্তান এক-পঞ্চমাংশের কম হলেও জনসংখ্যায় ছিল এগিয়ে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় পশ্চিম পাকিস্তানিদের চেয়ে বাঙালিদের অবদান ছিল ঢের বেশি। কিন্তু পাকিস্তানের রাজধানী করা হয় পশ্চিম অংশে। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদর দপ্তরও রাখা হয় পশ্চিম ভাগে। পাকিস্তানের বাজেটের এক বড় অংশ ব্যয় হতো সেনাবাহিনীর পেছনে। সে বাহিনীতে পূর্ব পাকিস্তানের হিস্সা ছিল নগণ্য। পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। জন্মসূত্রে যিনি ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের বাসিন্দা। প্রথম প্রধানমন্ত্রী করা হয় ভারত থেকে মোহাজের হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে আসা লিয়াকত আলি খানকে। আট সদস্যের মন্ত্রিসভায় তৎকালীন পূর্ব বাংলা থেকে তিনজন স্থান পান। শেখ হাসিনার আমলে পুঁজিবাজার লুটের খলনায়ক হিসেবে বিবেচিত সালমান এফ রহমানের বাবা ফজলুর রহমান ছিলেন তাদের অন্যতম। ঢাকার দোহারের সন্তান ফজলুর রহমান নিজেকে অবশ্য ‘বাঙালি’ বলে ভাবতেন না। সালমান এফ রহমানের মা সৈয়দা ফাতেনা রহমান ভাষা আন্দোলনের সময় উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্র ভাষার পক্ষে প্রচারণা চালান।
বলছিলাম আগস্ট মাসের কথা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সেনা অভ্যুত্থানে সপরিবার প্রাণ হারান রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান। সন্দেহ নেই, বাংলাদেশের এই অবিসংবাদিত নেতা দেশের নাজুক অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। ১৯৭২ সালেই শেখ মুজিবের শক্তির উৎস এবং আন্দোলন-সংগ্রামের ভ্যানগার্ড ছাত্রলীগে ভাঙন ধরে। সংগঠনের সিংহভাগ সদস্য বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও চলে যায় বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিকদের দখলে। ওই বিভক্তির কয়েক মাস পর সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের নেতৃত্বেই গঠিত হয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। এ দলের সভাপতি হন মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক মেজর (অব.) জলিল। সাধারণ সম্পাদক ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব। মুক্তিযুদ্ধকালে গঠিত মুজিব বাহিনীর সিংহভাগ সদস্য জাসদের সঙ্গে একাত্ম হন।
দুনিয়াজুড়ে তখন বইছিল সমাজতন্ত্রের হাওয়া। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ছিল জাসদের লক্ষ্য। আত্মপ্রকাশের পরপরই তারা দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী বিরোধী দলে পরিণত হয়। তারুণ্যনির্ভর এই দল আওয়ামী লীগ শাসনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধও গড়ে তোলে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) দুই অংশ সাংগঠনিক দিক থেকে ছিল বেশ শক্তিশালী। তবে জনসমর্থনের দিক থেকে জাসদ ছিল এগিয়ে। জাসদের পাশাপাশি সিরাজ শিকদারের নেতৃত্বাধীন আন্ডার গ্রাউন্ড সংগঠন সর্বহারা পার্টির তৎপরতা সরকারকে বিব্রত অবস্থায় ফেলে। জাসদ ছিল মুক্তিযোদ্ধানির্ভর দল। কিন্তু স্বীকার করতেই হবে, জাসদ গঠনের পর মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা এ দলের ছত্রছায়ায় আশ্রয় নেন। বিশেষ করে জামায়াতের ছাত্রসংগঠন জাসদ ছাত্রলীগের হয়ে যে তৎপরতা চালাত, এটি ওপেন সিক্রেট। জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ও অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার তাদের জাসদ ছাত্রলীগসংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় সর্বহারা পার্টি দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালিয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষত দক্ষিণাঞ্চলে। সে দলেও মুখোশ এঁটে ঠাঁই পায় স্বাধীনতাবিরোধীরা। স্বাধীনতার পর জাসদ ও সর্বহারা পার্টির নামে যেসব অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চলেছে তার পেছনে দলের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ভিন্ন মতাবলম্বীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
দুই.
জাসদ ও সর্বহারা পার্টির উগ্র তৎপরতায় মুজিব সরকার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেখ মুজিব ১৯৭৫ সালের ১ জানুয়ারি সব রাজনৈতিক দলের বিলুপ্তি ঘটিয়ে বাকশাল নামে একদলীয় শাসন কায়েম করেন। এ সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়নি। ঘরের মধ্যেই শুরু হয় বিভীষণদের তৎপরতা। ১৫ আগস্ট রাতে সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্যদের হাতে সপরিবার নিহত হন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিব। এ হত্যাকাণ্ডের পর শেখ মুজিবের লাশ ফেলে রেখেই তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী খোন্দকার মোশতাক রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেন। মোশতাক যে মন্ত্রিসভা গঠন করেন, তাতে দুই-একজন বাদে মুজিব সরকারের প্রায় সবাই শরিক হন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনায় জাসদের ভূমিকা কী তা এই দলটির সে সময়ের একজন কর্মী হিসেবে আজও আমার কাছে বড়মাপের এক প্রশ্ন। ১৫ আগস্টের এক দিন আগে ১৩ আগস্ট খুলনা নিউমার্কেটে আমরা কজন মিলে জাসদ তথা গণবাহিনীর মুখপত্র ‘লড়াই’ বিতরণ করছিলাম। এমন সময় রক্ষীবাহিনী নিউমার্কেট ঘেরাও করে। তবে তার আগেই আমরা পালাতে সক্ষম হই।
রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর পাই ১৫ আগস্ট সকালেই। জাসদ সে সময় ছিল সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ। সেনাবাহিনীর মধ্যেও ছিল শক্তিশালী অবস্থান। খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গা, গোবরচাকা, বয়রা, নূরনগরসহ ধারেকাছের এলাকায় জাসদ ছিল বেশ সুসংগঠিত। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের বদৌলতে বর্তমান সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় গণভিতও ছিল বেশ শক্তিশালী। নিউমার্কেটে জাসদের বিরুদ্ধে রক্ষীবাহিনীর অভিযানে ১৫ আগস্ট এলাকায় আমাদের সমীহের চোখে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু আমরা জাসদ কর্মীরা ভুগছিলাম সিদ্ধান্তহীনতায়। অনেক চেষ্টায় সন্ধ্যার পর খুলনার সে সময়ের শীর্ষ জাসদ নেতা কামরুজ্জামান টুকু ও অ্যাডভোকেট শেখ রাজ্জাক আলীর (পরবর্তী সময়ে বিএনপি নেতা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার) সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। টুকু ভাই ও রাজ্জাক স্যার সেনা অভ্যুত্থান সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেননি। তারা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
১৫ আগস্ট সকালে বাকশাল শাসন অবসানে স্বস্তি অনুভব করলেও খোন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে মুজিব সরকারের বিতর্কিতদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠিত হওয়াকে আমরা মেনে নিতে পারিনি। কারণ মোশতাক ছিলেন মুজিব মন্ত্রিসভার সবচেয়ে সমালোচিত ব্যক্তি। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে কুমিল্লার দাউদকান্দি আসনে আওয়ামী লীগের এই দুর্নীতিবাজ নেতা জাসদ প্রার্থী আবদুর রশিদ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে পরাজিত হন। মোশতাককে জয়ী করতে হেলিকপ্টারে ব্যালট পেপার ঢাকায় আনা হয় এবং ভোটের রায় উল্টে দেওয়া হয়। কার নির্দেশে এই অপকর্ম করা হয়েছিল তা একটি বড়মাপের প্রশ্ন। তবে স্বীকার করতেই হবে ওই ঘটনা শেখ সাহেবের জন্য সুখকর হয়নি। মোশতাককে ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে জিতিয়ে আনা না হলে তিনি আবার মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেতেন না। ঘরের শত্রু বিভীষণ হিসেবে বন্ধু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সুযোগ পেতেন না। নেতা ও বন্ধুর রক্ত মাড়িয়ে রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নিয়ে দেশের ইতিহাস কলঙ্কিত করার সুযোগও পেতেন না তিনি।
১৯৮৫ সালের পর জাসদ বা কোনো দলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। আপাদমস্তক সাংবাদিক হিসেবেই গত চার দশকের পথ চলা। তারপরও অর্ধ শতাব্দী আগে সংঘটিত ১৫ আগস্টের সামরিক অভ্যুত্থানে জাসদের ভূমিকা নিয়ে এখনো মনে প্রশ্ন জাগে। ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের পর জাসদের সব উইংয়ের নিয়ন্ত্রক হয়ে দাঁড়ায় গণবাহিনী। গণবাহিনীপ্রধান বীর উত্তম কর্নেল তাহের কখনো ১৫ আগস্ট পর্বে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। ১৫ আগস্ট-কাণ্ডের নায়ক কর্নেল রশিদ তাদের সঙ্গে তাহেরের সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন। এ স্বীকারোক্তি কতটা সত্যি তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। তবে কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীর প্রতীকের ভাষ্য রহস্য ঘনীভূত করেছে। তিনি লিখেছেন, মেজর ডালিম একবার গিয়েছিলেন কর্নেল তাহেরের নারায়ণগঞ্জের অফিসে। রিভলবার বের করে তিনি বলেন, আমি শেখ মুজিবকে হত্যা করব। তারপর দেশ পরিচালনা করবেন আপনি ও কর্নেল জিয়াউদ্দিন। কর্নেল তাহের মেজর ডালিমের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন কি না, বেলাল তা স্পষ্ট করেননি। স্মর্তব্য বেলাল পরবর্তী সময়ে জাসদ থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নেত্রকোনা-৫ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তিন.
আগস্ট আর অঘটন যেন সমার্থক হয়ে আছে এই দেশে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন ২৪ জন নেতা-কর্মী। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ আহত হন প্রায় ৩০০ জন। এ ঘটনা দেশের দুই বৃহত্তম দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দূরত্ব অনতিক্রম্য করে তোলে। অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা দেশের রাজনীতির নিয়ামক হয়ে দাঁড়ায়। ২০০৬ সালের ওয়ান-ইলেভেন-কাণ্ডের পেছনেও তা মদত জোগায় বলে মনে করা হয়।
২০০৮ সালে দেশ ওয়ান-ইলেভেনের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়। ওই বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর আশা করা হয়েছিল আমাদের রাজনীতিকরা শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবেন। সরকার ও বিরোধী দল গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা দিতে একে অন্যের সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন। সবারই জানা, ওয়ান-ইলেভেনে নির্যাতনমূলক আচরণের শিকার হন বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতারা। বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে কারারুদ্ধ করা হয়। আটকাবস্থায় বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়, তাকে বর্বরতা বললেও কম বলা হবে। জানামতে আটকাবস্থায় অতীতে আর কোনো নেতাকে এমন পৈশাচিকতার সম্মুখীন হতে হয়নি।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের হীনম্মন্যতায় ২০০৮ সালে গণতন্ত্রের পথে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে দেশে যে নির্বাচন হয়, তা ছিল গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানোর মহাযজ্ঞ। গণতন্ত্রহীনতার লজ্জা থেকে বাঁচতে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে রাজপথে নেমেছিল সর্বস্তরের মানুষ। এ অভ্যুত্থানে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটলেও গণতন্ত্র যে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে, তা এক মহা সত্যি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ঘোষণা করা হলেও তা বানচালের হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রকাশ্যে। জনমনে আশঙ্কা দেশ হয়তো আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের পথে হাঁটছে। এই অপখেলা বন্ধ হওয়া দরকার।
লেখক : সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইমেইল : [email protected]