ভারতের সবচেয়ে নিরাপদ শহরের তালিকায় আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে কলকাতা। টানা চতুর্থবারের মতো ‘দেশের নিরাপদতম শহর’-এর স্বীকৃতি পেল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহরটি।
‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’ (এনসিআরবি)-এর সর্বশেষ ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০ লাখের বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট ভারতের ১৯টি শহরের মধ্যে কলকাতায় গুরুতর অপরাধের হার সবচেয়ে কম। এক লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে গুরুতর অপরাধ (ধর্ষণ, খুন, অপহরণ) মাত্র ৮৩.৯টি ঘটেছে শহরটিতে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালে প্রতি লাখে গুরুতর অপরাধের হার ছিল ১৫৯.৬টি। ক্রমে সেই সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমে আসে—২০২১ সালে ১০৩.৫টি, ২০২২ সালে ৮৬.৫টি, আর ২০২৩ সালে নেমে দাঁড়ায় ৮৩.৯টিতে।
কলকাতার পরেই রয়েছে হায়দ্রাবাদ (৩৩২.৩), পুণে (৩৩৭.১) ও মুম্বাই (৩৫৫.৪)। অন্যদিকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে কেরলের কোচি, যেখানে প্রতি লাখ জনসংখ্যায় গুরুতর অপরাধের সংখ্যা ৩,১৯২.৪টি। এর পরেই রয়েছে দিল্লি (২,১০৫.৩) ও গুজরাটের সুরাত (১,৩৭৭.১)।
এছাড়াও গত দুই বছরে কলকাতায় মোট অপরাধের সংখ্যাও কমেছে। ২০২৩ সালে শহরে গুরুতর অপরাধের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১,৮৪৩টি, যা ২০২২ সালে ছিল ১২,২১৩টি এবং ২০২১ সালে ১৪,৫৯১টি।
নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধও কমেছে বলে জানায় এনসিআরবি। ২০২৩ সালে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১,৭৪৬টি, যা আগের বছরের (২০২২ সালে ১,৮৯০টি) তুলনায় কম। এক লাখ জনসংখ্যায় নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার ২৫.৭, যা দেশের মধ্যে তৃতীয় সর্বনিম্ন। এই তালিকায় প্রথম চেন্নাই (১৭.৩) এবং দ্বিতীয় কোয়েম্বাটুর (২২.৭)।
২০২৩ সালে কলকাতায় প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ওপর ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১০টি, নাবালিকা ধর্ষণ ১৭২টি এবং নাবালিকা যৌন হেনস্তার ঘটনা ৩৩টি।
তবে ইতিবাচক চিত্রের মধ্যেও কিছু সতর্ক সংকেত রয়েছে। গত বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে খুনের ঘটনা বেড়েছে। এ বছর শহরে ৪৩টি খুনের ঘটনা ঘটে, যা ২০২২ সালে ছিল ৩৪টি।
কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার, রাতে টহলদারি বৃদ্ধি, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং নাগরিকদের আইন মেনে চলার মানসিকতাই এই সাফল্যের মূল কারণ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল