দীর্ঘদিন দেশ ছেড়ে পালিয়ে থাকার পর দেশে ফিরে আটক হয়েছেন হালট্রিপ কেলেঙ্কারির হোতা মোহাম্মদ তাজবীর হাসান। তিনি সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
গতকাল শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করে বিশেষ একটি সংস্থা। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা তাকে বিমানবন্দরের থানায় হস্তান্তর করেন।
বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক এসআই আনিসুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আটক তাজবীরকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, হালট্রিপ কেলেঙ্কারির হোতা তাজবীর হাসানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভ্যারিফায়েড পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের সামি।
দুপুর ১২টায় দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, ‘দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কার্যক্ষমতা নিয়ে আমরা প্রায়ই নেতিবাচক ধারণা পোষণ করি। তবে, সম্ভবত সময় এসেছে তাদের তৎপরতার কিছুটা হলেও প্রশংসা করার।আজ ৪ অক্টোবর ২০২৫, মধ্যরাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিশেষ একটি সংস্থার প্রচেষ্টায় ‘হাল ট্রিপ’ কেলেঙ্কারির অন্যতম কুশীলব, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তাজবীর হাসানকে আটক করা হয়েছে। পিকে হালদারের ঘনিষ্ঠ এই সহযোগী গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তুরস্কের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন। ২০২০ সালে গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা নিয়ে হঠাৎই উধাও হয়ে যায় হালট্রিপ, ক্ষতিগ্রস্ত হয় অসংখ্য যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্সি।’
তিনি লিখেছেন, ‘২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও অন্তত দুটি দেশের (তুরস্ক ও ভানুয়াতু) নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন মোহাম্মদ তাজবীর হাসান। এছাড়াও তার মাল্টার রেসিডেন্সি এবং স্পেনের গোল্ডেন ভিসা রয়েছে বলে দাবি করেছে কয়েকটি সূত্র।
২০২০ সালে গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা মেরে দিয়ে দেশ ছাড়ার পর, একই বছরের মার্চে তাজবীর ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং দুবাইতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ফ্রন্ট কভার হিসেবে দুবাই, স্পেন ও মাল্টায় বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন। পাশাপাশি, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সরকারি কর্মকর্তাকে ভানুয়াতু ও তুরস্কের নাগরিকত্ব কিনতেও সহায়তা করেছেন।
বর্তমানে তাকে এয়ারপোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে এবং আদালতে প্রেরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থা এই অর্থনৈতিক অপরাধীর কাছ থেকে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
যদি আপনি বা আপনার প্রতিষ্ঠান এই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান হালট্রিপের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ স্টেশনে উপস্থিত হয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বিবেচনা করতে পারেন।’
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত