গাজায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের জন্য খাদ্য, ত্রাণ ও চিকিৎসাসামগ্রী বহনকারী আন্তর্জাতিক মানবিক নৌ-অভিযান গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ওপর ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিঙ্ক (ইউটিএল)। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এ মানববন্ধনে ইউটিএলের সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও মানবাধিকারকর্মীরা এক হয়ে এ আক্রমণের প্রতিবাদ জানান। প্রফেসর মো. বেলাল হোসাইনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ইউটিএলের সদস্য মো. কামরুল হাসান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ঢাবির অধ্যাপক মো. আবু সায়েম, অধ্যাপক যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক, অধ্যাপক এইচ এম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।
কামরুল হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিবেক আজ নিশ্চুপ। বিশ্বসংস্থাগুলো প্রত্যাশা অনুযায়ী এগিয়ে আসছে না। গাজাকে ইসরায়েল মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। বিশ্ববিবেক জাগিয়ে তোলার জন্যই এ সুমুদ ফ্লোটিলা।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্বমানবতা জেগে উঠুক, যেন আর কোনো শিশু, আর কোনো মা রক্তে ভেসে না যায়। ইসরায়েলের এ বর্বরতা থামাতে হবে।’
প্রফেসর মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষ কেবল মুসলমান বলেই আজ তাদের ওপর ইসরায়েল অমানবিক হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এটি মানবতার জন্য চরম লজ্জাজনক একটি অধ্যায়। একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হয়েও ইসরায়েল আজ সারা পৃথিবী ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।’ তিনি সুমুদ ফ্লোটিলার প্রতি সংহতি জানিয়ে বলেন, ‘কিছু মানুষ সামান্য খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী নিয়ে গাজায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে, অথচ ইসরায়েল সেটিও সহ্য করতে পারছে না। তারা এ মানবিক উদ্যোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আজ প্রশ্ন জাগে-কোথায় জাতিসংঘ? কোথায় ওআইসি?’
অধ্যাপক মো. আবু সায়েম বলেন, ‘দুই বছর ধরে গাজার মুসলমান ভাইবোনদের ওপর ইসরায়েল যে বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে তা অকল্পনীয়। মুসলিম বিশ্ব আজ নিশ্চুপ, যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। মানবতা ঘুমিয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে চুক্তি ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা কার্যকর হলে তাদের স্বাধীন আবাসভূমির স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আমি সেই চাপিয়ে দেওয়া চুক্তির তীব্র সমালোচনা করছি। বরং দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সহাবস্থানই এ সংকটের একমাত্র সমাধান হতে পারে।’
অধ্যাপক যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক বলেন, ‘গাজার দুই বছরের অবরোধ ভেঙে ফেলতে আন্তর্জাতিক অধিকারকর্মীরা রওনা হয়েছিলেন। তাঁরা গাজায় ত্রাণ সরবরাহ করার জন্য একটি মানবিক করিডর তৈরি করতে চেয়েছিলনে। কিন্তু ইসরায়েল সেই অধিকারকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এ অন্যায় কার্যক্রমের প্রতিবাদ জানাই।’
অধ্যাপক এইচ এম মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। অবরোধ প্রত্যাহার করতে হবে। ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার পথে বিশ্বসম্প্রদায়কে সক্রিয় হতে হবে।’