মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ৯০ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা-অধ্যুষিত বাংলাদেশে এটি সে বিবেচনায় সবচেয়ে বড় উৎসব। এতে শরিক হয় সব সম্প্রদায়ের মানুষ। ঈদুল ফিতর হলো সিয়ামসাধকদের জন্য মহান আল্লাহর পুরস্কার। ঈদুল ফিতরের আনন্দ বিশেষভাবে তাদের জন্যই আসে, যারা মাহে রমজানে আত্মশুদ্ধির শিক্ষায় নিজেদের আলোকিত করে। রমজানে মাসব্যাপী সিয়ামসাধনার পর শাওয়ালের সূচনায় রোজা ভঙ্গ ও ঈদের জামাতে হাজির হওয়াই ইসলামি পরিভাষায় ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতরের সকালে বিশ্বাসী মানুষ ছুটে যায় ঈদের জামাতে। নামাজ শেষে তারা একে-অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে। পারস্পরিক আত্মিক সম্পর্ক সৃষ্টি করে ঈদগাহের এ মিলনমেলা। মানুষ উৎসবী পরিবেশ ও পরিচ্ছন্ন মনমানসিকতা নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ পবিত্র জীবনযাপন করবে, আল্লাহ তেমনটিই চান। এ উৎসবে সমাজের ধনী-গরিবনির্বিশেষে সব বিশ্বাসী মানুষ যাতে অংশ নিতে পারে, সেজন্য রয়েছে আল্লাহর সুস্পষ্ট বিধান। এজন্যই সাদাকাতুল ফিতর আদায় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রমজানের মাসব্যাপী সিয়ামসাধনা মানুষকে একদিকে ত্যাগের শিক্ষা দেয়, অন্যদিকে ঈদ ধনীনির্ধননির্বিশেষে আত্মীয়স্বজন-প্রতিবেশীদের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগির তাগিদ দেয়। এ বছর ঈদ এসেছে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার দুঃসময়ে। চৈত্রের অর্ধেক পেরিয়ে বেশ গরমে মন্দার কারণে অসহায় অবস্থায় পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। ঈদে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। গরিবদুখীদের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করে ঐশী নির্দেশনার প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপনের জন্য এ বছরও ঢাকা ছেড়েছে প্রায় দেড় কোটি মানুষ। অন্যান্য মহানগরী থেকেও কর্মজীবীর বড় অংশ ঈদ উদ্যাপনের জন্য ফিরেছে নিজেদের গ্রাম বা মহল্লায় নাড়ির টানে। আশা করব, তাদের সবাই সুস্থভাবে কর্মস্থলে ফিরে আসবে। ঈদে পথ চলাচলে চালক-যাত্রী সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন, এমনটিই প্রত্যাশিত। ঈদ মুবারক।