বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের দড়িপাড়া গ্রাম। সেই গ্রামে দিগন্তজুড়ে হাসি মুখে ফুটে আছে সূর্যমুখী ফুল। যা দেখে মন ভরে যাবে যে কারও। আর এ জন্যই হয়তো এ ফুলের সমারোহ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে আসছেন শত শত মানুষ। তবে একটা কথা বলতেই হয় বিনা পয়সায় কিন্তু সূর্যমুখীর এ সৌন্দর্য দেখা যাবে না। এ জন্য খরচ করতে হবে জনপ্রতি ২০ টাকা। তারপরও দর্শনার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠেছে ওই এলাকা। বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলেও সেটি এখন বিনোদন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
দড়িপাড়া গ্রামের যুবক সৌরভ মাহমুদ মিশু বাণিজ্যিক হিসেবে ২০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। এতবড় এলাকায় ফসলের সবুজ মাঠের ভিতরে বেড়ে ওঠা সূর্যমুখী ফুলের বাগানে হলুদ ফুলে মন কাড়ছে পথচারীদের। এদিকে ২০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে লাভের আশা করছেন চাষি সৌরভ। সৌরভ পড়াশোনা শেষ করে চাকরি না পেয়ে বাড়িতেই আউট সোর্সিং কাজ করে সংসারের হাল ধরেছেন। পাশাপাশি ইউটিউব দেখে তিনি সূর্যমুখী চাষের স্বপ্ন দেখেন। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে গত বছর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ২০ বিঘা জমিতে তিন ধাপে সূর্যমুখীর চাষ করেন তিনি। সূর্যমুখী তেল উৎপাদন থেকে আয়ের পাশাপাশি মিশু বাগানে ভ্রমণের জন্য দর্শনার্থীদের জন্য ২০ টাকা মূল্যের টিকিট চালু করেছেন। যেখান থেকে তিনি বাড়তি আয় করছেন। ঈদুল ফিতরে দর্শনার্থীদের সমাগম বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন তিনি।
সূর্যমুখী বাগানে ঘুরতে আসা বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল মাহমুদ জানান, খবর পেয়ে সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং ফুলের সঙ্গে ছবি তুলতে বাগানে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে। আলাদা অনুভূতিরও সৃষ্টি হয়েছে। ২০ টাকায় টিকিট কেটে পুরো বাগান ঘুরে দেখেছি। হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে বাগান।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর এ উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছিল। চলতি বছরে ১ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৪ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। গত বছর প্রতি হেক্টর জমিতে ৪৮ মণ সূর্যমুখী উৎপাদন হয়েছিল। বাজারে প্রতিমণ সূর্যমুখী ৬ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। সাধারণত ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যায়।