২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে পড়েছেন ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।
গতকাল ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৫ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। এদিন বেলা ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে অতিথিরা আসন গ্রহণ করেন, এরপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ। সমাবেশ ও কুচকাওয়াজের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বরণ করে নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকার জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কোনো বিনিময় হয় না। মুক্তিযোদ্ধা যারা বেঁচে আছেন, তাঁরা আমাদের সম্পদ। তাঁরা আমাদের মাথার তাজ। প্রত্যেক বছরই আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। একসময় হয়তো একজন মুক্তিযোদ্ধাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। অনেক খুঁজে হয়তো আমরা একজনকে পাব। তখন বুঝতে পারব, মুক্তিযোদ্ধাদের কদর।’
এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননার ব্যাপারে কোনো কিছু লিপিবদ্ধ নেই। এখনই উপযুক্ত সময়, সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের লিপিবদ্ধ করুন। মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরক্ষা আইন করুন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব, মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা করুন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বের করুন। কীভাবে করবেন, আমরা জানি না।’
একপর্যায়ে বক্তব্য শুরু করেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম তার এখনো অপূর্ণতা রয়ে গেছে। যার কারণে ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন সংবর্ধনা দিয়েছি, জুলাই আন্দোলনকারীদেরও সংবর্ধনা দেব। যে দুই কারণে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়েছিল একই কারণে ২০২৪ এ যুদ্ধ হয়েছে। বারবার যুদ্ধ করেছি।
এ সময় সামনে বসে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে পড়েন এ সিভিল সার্জন। তারা আসন থেকে উঠে এর প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন, আপনি বলছেন একই কারণে যুদ্ধ হয়েছে। একই কারণে না। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার যুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪ এর আন্দোলনে তুলনা হয় না। আপনার কথা উইড্রো করেন। আপনি নেমে যান। পরে নিজের অনাকাক্সিক্ষত ভুলের জন্য ক্ষমা চান সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।