রাজশাহীতে নিয়ম না মেনেই গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই অধিকাংশ ভবনে। সরু গলিপথের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার তৎপরতায় ভোগান্তিতে পড়তে হবে ফায়ার সার্ভিসকে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, রাজশাহীতে তিন শতাধিক বহুতল ভবন আছে। তবে এগুলোর ৯৯ শতাংশ ভবনেই অনিয়ম আছে। এসব ভবন ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। অধিকাংশ ভবনেই নেই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। এমনকি আছে বিল্ডিং কোডের অনিয়ম।
এদিকে নকশার অনুমোদন ও ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই দায় সারছে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠান। শুধু ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ ভবনের তালিকা করেই দায়িত্ব শেষ করছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।
আরডিএ আবাসিক ও বাণিজ্যিক এই দুই ধরনের ভবনের নকশার অনুমোদন দিয়ে থাকে। তবে রাজশাহীতে সফট কমার্শিয়াল ভবনের নকশার অনুমোদন দেওয়া হয়। কয়েকটি ভবন আছে মার্কেটের জন্য অনুমোদিত। সফট কমার্শিয়াল ভবনে আবাসিক ও অফিস এই দুই ধরনের কার্যক্রমেরই অনুমোদন দেওয়া হয়ে থাকে। তবে অনুমোদন না থাকলেও রাজশাহী নগরীর প্রধান প্রধান সড়কের ধারে অধিকাংশ ভবনই এখন বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ভবনে ঝুঁকি নিয়ে গড়ে উঠেছে একাধিক রেস্তোরাঁ ও অভিজাত পোশাকের শোরুম।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় ট্রেড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১২ হাজার এবং হোল্ডিং নম্বরের সংখ্যা ৭০ হাজারের বেশি। যা থেকে বার্ষিক রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ১৪ কোটি টাকা। রাসিকের রাজস্ব বিভাগের দাবি, ট্রেড লাইসেন্স দিতে ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেখার নির্দেশনা নেই। আর আরডিএর দাবি, তাদের দায়িত্ব হলো- ভবন নির্মাণে নকশার অনুমোদন ও অনুমোদনমাফিক কাজ হচ্ছে কিনা, তা দেখভাল করা। রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাইদ বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার সঙ্গে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভবনের নকশা বা ঝুঁকির বিষয়গুলো দেখার কোনো বিধান নেই। এ বিষয়গুলো দেখবে আরডিএ, নয়তো ফায়ার সার্ভিস।’
রাজশাহী বিভাগের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক ওহিদুল ইসলাম জানান, ‘রাজশাহীতে তিন শতাধিক বহুতল ভবন আছে। এসব ভবনের ৯৯ শতাংশেই অনিয়ম আছে। এসব অনিয়মের বিভিন্ন মাত্রা ও বিভিন্ন দিক আছে।’ আরডিএ চেয়ারম্যান এস এম তুহিনুর আলম জানান, আরডিএ এসব ভবনের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে।