রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পূর্ণ করে পা রাখল ১৮তম বর্ষে। রবিবার (১২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন হয় সকালে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে। উদ্বোধনী পর্ব শেষে বেরোবি ক্যাম্পাস থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর প্রধান সড়ক ঘুরে পুনরায় ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। প্রাক্তন শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে এক স্মৃতিময় পরিবেশের সৃষ্টি হয় পুরো প্রাঙ্গণে। কেউ স্মরণ করেন আন্দোলনের দিনগুলো, কেউ ফিরে যান ক্লাসরুমের গল্পে, কেউ আবার খুঁজে ফেরেন হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের। মিলনমেলায় পরিণত হওয়া এ উৎসব যেন অতীত ও বর্তমানের সেতুবন্ধন হয়ে উঠে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে কেক কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা হয় আলোচনা সভার। এ সময় জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা জানানো হয়।
আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। উদ্বোধক ছিলেন রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. রেজাউল হক। প্রধান আলোচক ছিলেন প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. এনামউল্ল্যা এবং কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রাশেদুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন বেরোবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুরো ক্যাম্পাসে ঝলমলে সাজে সাজানো হয় ভবন ও প্রাঙ্গণ। প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বাদ আসরের পর মিলাদ মাহফিল এবং সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান নয়, এটি উত্তরবঙ্গের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও আন্দোলনের ফসল। প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের প্রতি জানানো হয় গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে স্মরণ করে বক্তারা বলেন, তাঁর আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ রাখা হয়।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ