জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা মো. এহছানুল হক। তিনি চুক্তিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২১ দিন সচিব খালি থাকার পর গতকাল তাকে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দায়িত্ব চালিয়ে আসা মো. মোখলেস উর রহমানকে নানা অনিয়ম ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে গত ২১ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) হিসেবে বদলি করা হয়। জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তিকে তলানিতে নিয়ে যাওয়া মোখলেস উর রহমানও ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। তাই গতকাল নতুন সচিব নিয়োগ পাওয়ার পর আলোচনায় আবার ৮২ ব্যাচ নিয়ে। এক কর্মকর্তার দুর্নাম কতটুকু সুনামে পরিণত করতে পারবে সে আলোচনাও হয়েছে সচিবালয়ে। দায়িত্ব পাওয়ার পর গতকালই জনপ্রশাসনে যোগদান করেন নতুন সিনিয়র সচিব। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এহছানুল হক বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ ও সুরক্ষা পেলে কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সমর্থ হবেন। কী ধরনের সুরক্ষার কথা বলছেন জানতে চাইলে সচিব বলেন, সুরক্ষা হলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া।
তিনি বলেন, কর্মকর্তারা যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন না করেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। কোনো কর্মকর্তার যদি দলীয় সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, উনাকে নির্বাচনের বাইরে রাখব। আমি কখনো দলীয় নির্দেশে কাজ করিনি। এখনো করি না, ভবিষ্যতেও করব না বলেও মন্তব্য করেন নতুন জনপ্রশাসন সচিব।
সামনে জাতীয় নির্বাচন। মাঠ প্রশাসনসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্বে এসেছেন। এটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করছেন কি না জবাবে নতুন জনপ্রশাসন সচিব বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ হলো, এটা সবচেয়ে সুষ্ঠু একটা নির্বাচন হবে। নির্বাচনকালীন আমরা নির্বাচন কমিশনের অধীন চাকরি করি। আমাদের যারা মাঠ প্রশাসনে আছেন, আমার বিশ্বাস, তাঁরা অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে এই দায়িত্ব পালন করবেন।
সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমার। এ দায়িত্ব আমি নিলাম। নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদে পরিবর্তন আসবে কি না জানতে চাইলে এহছানুল হক বলেন, এটা নিয়ে নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এর আগে কিছু বলতে পারছি না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৭ আগস্ট দুই বছরের চুক্তিতে সচিব নিয়োগ পান এহছানুল হক। এরপর তাকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পদায়ন করা হয়। এক দিন পর গত বছরের ১৮ আগস্ট সিনিয়র সচিব করা হয় এই কর্মকর্তাকে। অতিরিক্ত সচিব থাকা অবস্থায় অবসরে গিয়েছিলেন এহছানুল হক। এহছানুল হক ১৯৮৩ সালে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০১-০৬ সময়ে বিএনপি সরকারের আমলে তিনি জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব, ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।