বাগেরহাটের দুটি ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদে টানা ৯ দিনের ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড় বেড়েই চলেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন শত শত পর্যটকরা। রয়েছে বিদেশি পর্যটকও। রোজা শেষ না হওয়ায় এখনো পর্যটকদের উপচে পড়া ঢল শুরু হয়নি। সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
সুন্দরবন বিভাগ ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বলছে ঈদের দিন থেকেই এই দুটি ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইডে পর্যটকদের ঢল নামা শুরু হবে। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র ছাড়াও হিরণ পয়েন্ট, আলীবান্ধা, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, জামতলা সিবিচ, টাইগার পয়েন্ট, দুবলা, বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড, ত্রিকোণ আইল্যান্ড, কলাগাছি ও দোবেকি পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে।
তবে, শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর পাড়ে রিভারভিউ ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে পর্যটকদের ঢল নামতে শুরু হয়েছে। প্রতিদিন বিকেলে বঙ্গোপসাগর মোহনায় সূর্যাস্ত দেখতে এই কেন্দ্রটিতে ভীড় করছেন হাজার হাজার পর্যটক। এদিকে পর্যটন এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ ট্যুরিস্ট পুলিশ।
দিনাজপুর জেলা থেকে সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদে দেখতে আসা দ্বীপন চন্দ্র সেন জানান, আমি সরকারি চাকরি করি। ঈদের টানা ছুটি কাটাতে বন্ধুদের নিয়ে বাগেরহাটের দুটি ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখতে এসেছি। সুন্দরবনের করমজল ইকোট্যুরিজম দেখার পর এখন ষাটগম্বুজ মসজিদের প্রাচীন এ নিদর্শন দেখতে পেরে ভালো লাগছে। জীবনে অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল সুন্দরবন ও ষাটগুম্বুজে আসা। এতোদিন সময় হয়ে ওঠেনি। আজ আসতে পেরে খুব ভালো লেগেছে।
কুমিল্লা থেকে আসা এহসান আহমেদ খান ও তার চাচা কদম আবরার খান জানান, গতকাল শরণখোলার বলেশ্বর রিভারভিউ ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে দেখে আজ হযরত খানজাহান আলী (রহ:) মাজার হয়ে ষাটগম্বুজ মসজিদে এসে দেখে অনেক ভালো লাগছে। এদের মতো অনেক দেশি বিদেশি ভ্রমণ পিপাসুরা সুন্দরবন, ষাটগম্বুজ মসজিদ ও শরণখোলার বলেশ্বর রিভারভিউ ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে এসে তাদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন।
প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর বিভাগের ষাটগম্বুজ মসজিদের কাস্টোডিয়ান মো. জায়েদ জানান, একটানা ৯দিনের ঈদের সরকারি ছুটিতে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড ষাটগম্বুজ মসজিদে পর্যটকদের ভিড় বেড়েই চলেছে। রমজান থাকায় এখনো পর্যটকদের উপচে পড়া ঢল এখনো শুরু হয়নি। ঈদের দিন থেকেই এই ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইডে পর্যটকদের ঢল নামাবে। পর্যটকদের ঢল সামাল দিতে আমরাসহ ট্যুরিস্ট পুলিশ সব রকম প্রস্তুস্তি নিয়ে রেখেছি।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার মো. আজাদ কবির জানান, সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রটি ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকদের আগমন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাড়াও হিরণ পয়েন্ট, হারবাড়িয়া, আলীবান্ধ, কটকা, কচিখালী, জামতলা সিবিচ, টাইগার পয়েন্ট, দুবলা, বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড, ত্রিকোণ আইল্যান্ড, কলাগাছি ও দোবেকি পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। ঈদের দিন থেকে সুন্দরবনের এসব পর্যটন এলাকায় হাজারো পর্যটকের ঢল নামবে। পর্যটকদের ভিড় সামাল দিতে সুন্দরবন বিভাগ সব রকম প্রস্তুস্তি নিয়েছে। করমজলের এই পর্যটন কেন্দ্রটি দর্শনার্থীদের কাছে আরও মনোমুগ্ধকর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে ঝুলন্ত ব্রিজসহ নির্মাণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল