যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আদালতের ধারাবাহিক রুলিংয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অভিবাসী বহিষ্কার, ফেডারেল কর্মী ছাঁটাইসহ তার প্রশাসনের বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ আদালতের স্থগিতাদেশে আটকে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ট্রাম্প প্রশাসন এখন বিচার বিভাগের ক্ষমতা সীমিত করার চিন্তা করছে।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা যুক্তি দিচ্ছেন, আঞ্চলিক পর্যায়ের ফেডারেল আদালতের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা সারা দেশে কার্যকর হওয়া উচিত নয়। এমনকি, সার্কিট কোর্ট অব আপিলের নির্দেশনা সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদনের ঊর্ধ্বে থাকা গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করা হচ্ছে। আইনজীবীরা বলছেন, নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী জনস্বার্থে পদক্ষেপ নিতে গেলেই আদালতের রুলিং তাদের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এই অবস্থাকে আইনের শাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা আইনজীবী প্রতিষ্ঠান 'উইলিয়ামস অ্যান্ড কনোল্লি’র অ্যাটর্নি লিউক ম্যাকক্লাউড। তিনি বলেন, “আইনি প্রক্রিয়াকে ট্রাম্প প্রশাসন যেন সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করছে। অথচ, আদালতের এই ক্ষমতা বহুদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত।”
তিনি আরও বলেন, আদালত এর আগেও ওবামার ‘ওবামা কেয়ার’ এবং বাইডেনের ‘স্টুডেন্ট লোন মওকুফ’ পরিকল্পনা স্থগিত করেছিল, কিন্তু তখন প্রশাসন এমন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৯৪টি ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট রয়েছে। এদের যেকোনো একটির দেওয়া স্থগিতাদেশ পুরো দেশে কার্যকর হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই ব্যবস্থাই প্রশাসনিক কার্যক্রমে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আদালতের এই ক্ষমতা খর্ব করতে তার আইনজীবীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের মতে, কেবল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশই সারাদেশে কার্যকর হওয়া উচিত। ট্রাম্প টিম বলছে, ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের নিষেধাজ্ঞা প্রেসিডেন্টের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলিকে তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হতে বাধা দিচ্ছে, আর সুপ্রিম কোর্টে আপিল নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময় লাগে।
সম্প্রতি অভিবাসনসংক্রান্ত কয়েকটি নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতের রুলিংয়ের পর ১৬ মে ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি লিখেন, “নির্বাচনে ধরাশায়ী উগ্র-বামপন্থি ডেমোক্র্যাটদের খুশি করতে সুপ্রিম কোর্টও তামাশা করছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আমাদের দেশ থেকে ভয়ংকর অপরাধীদের তাড়িয়ে দিতে চাইলেও সুপ্রিম কোর্ট তা করতে দিচ্ছে না।”
এর আগে এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্ট, বহু আগের ‘এলিয়েন অ্যান্ড এনিমিজ অ্যাক্ট’ দেখিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেনিজুয়েলার অভিবাসীদের গ্রেফতার ও বহিষ্কারের উদ্যোগের বিরুদ্ধেও রুল জারি করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, আদালতের ক্ষমতা সীমিত করতে হলে কংগ্রেসে আইন পরিবর্তন করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নীল গোরসাচও ইঙ্গিত দিয়েছেন, বর্তমান আইনি কাঠামো পাল্টাতে চাইলে প্রয়োজন হবে কংগ্রেসের অনুমোদনের।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল