বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়েকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাড়িতে ঢুকে বাবা ও মাকে চাকু দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে এক যুবক। ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে থানা পুলিশ ওই যুবক নাফিজ ফয়সাল আকাশকে আটক করেছে। এঘটনায় আহতদের পক্ষ থেকে একই দিনে থানায় অভিযোগ দিলেও শনিবার (১৭ মে) বিকাল ৪টা পর্যন্ত মামলা দায়ের করা হয়নি।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনার পর থেকে কলেজ ছাত্রীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আহত মেয়ের বাবা মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে এই হামলার পর থেকে মেয়ে ও পরিবারের সদস্যরা এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এলাকাবাসী বলছেন, আটক যুবক নাফিজ ফয়সাল আকাশ স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় মামলা নিতে গড়িমশি করা হচ্ছে।
বগুড়ার ধুনট থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধুনট উপজেলার উল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের পাবনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (অনার্স) পড়ুয়া মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিলো ধুনট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক একই গ্রামের বাসিন্দা আবুল মুনছুর আহম্মেদ পাশার ছেলে নাফিজ ফয়সাল আকাশ। এ বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের মাঝে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। কিন্ত এ ঘটনার কোন মিমাংসা হয়নি। এর এক পর্যায়ে শুক্রবার বিকেলে নাফিজ ফয়সাল আকাশ সহযোগীদের নিয়ে কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে বিয়ে ও প্রেমের প্রস্তাবসহ নানা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে। মেয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে মা আর্জিনা খাতুন কথা বলতে গেলে নাফিজ ফয়সাল আকাশ তার উপর চাকু নিয়ে হামলা করে আহত করে। স্ত্রীকে উদ্ধারে স্বামী জাহ্ঙ্গাীর আলম এগিয়ে গেলে তাকেও মারপিটে আহত করা হয়। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে যুবকরা পালিয়ে যায়। এই হামলায় আহতরা হলেন, উপজেলার উল্লাপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৫০) ও তার স্ত্রী আর্জিনা খাতুন (৪৫)। আহতদের প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে আর্জিনা খাতুনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আকাশের বাবা ধুনট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনছুর আহম্মেদ পাশা বলেন, মেয়েটির সাথে আমার ছেলের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এঘটনার সাথে আরো কিছু ঘটনা আছে। সেটা জানতে হবে।
বগুড়ার ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম জানান, সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এক নারীকে চাকু মারার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আকাশ নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। এখনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, অভিযোগ উঠেছে ঘটনাটি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এর ছেলে ঘটিয়েছে বলে এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি। প্রভাবশালীদের চাপে ঘটনাটি বেশি জানাজানি যেন না হয় সে বিষয়েও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বর্তমানে অসহায় পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল