যাঁদের ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন নেই, তাঁদের জন্য ইউটিউব ব্যবহার মানেই মাঝেমধ্যে বিরক্তিকর বিজ্ঞাপনের মুখোমুখি হওয়া। কিন্তু এখন সেই অভিজ্ঞতা আরও বিরক্তিকর ও বিভ্রান্তিকর হতে পারে—গুগলের নতুন এআই-চালিত বিজ্ঞাপন প্রযুক্তির কারণে।
সম্প্রতি নিউইয়র্কে গুগলের ‘আপফ্রন্ট’ উপস্থাপনায় ঘোষণা করা হয় ইউটিউবের নতুন ফিচার ‘পিক পয়েন্টস’। এই কৌশলে ব্যবহার করা হবে জেমিনাই এআই। এর মাধ্যমে ইউটিউব বুঝতে পারবে, ভিডিওর কোন মুহূর্তে দর্শকের মনোযোগ সর্বোচ্চ থাকে বা তারা আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠে—এবং সেই সময়েই চালানো হবে বিজ্ঞাপন।
গুগলের এই উদ্ভাবন বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে আকর্ষণীয় হলেও, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য তা হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত হতাশাজনক। বিশ্লেষকদের মতে, দর্শক যখন ভিডিওর চূড়ান্ত মুহূর্তে আবেগে আচ্ছন্ন থাকেন, তখন অপ্রত্যাশিত বিজ্ঞাপন মনোযোগ ও অভিজ্ঞতা—উভয়ই নষ্ট করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজ্ঞাপনদাতারা এমন সময়ে বিজ্ঞাপন দেখাতে পারলে উচ্চমূল্যে বিজ্ঞাপন বিক্রি করা সম্ভব হবে। তবে বিজ্ঞাপন যদি প্রাসঙ্গিক না হয়, তাহলে সিটিআর (Click-Through Rate) বাড়বে না—বরং দর্শকের বিরক্তি বাড়বে।
বর্তমানে ইউটিউবে প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন না থাকলে দর্শককে ভিডিও শুরুর আগে, ভিডিও চলাকালীন, এমনকি ভিডিও প্রিভিউর পাশেও বিজ্ঞাপনের মুখোমুখি হতে হয়। এবার সেখানে যুক্ত হচ্ছে ‘পিক পয়েন্টস’ কৌশল।
যদিও এ ধরনের পরিবর্তন দর্শকদের জন্য অস্বস্তিকর, তবে কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য সুখবর হতে পারে। কারণ বিজ্ঞাপন দেখানো হলে তাদের আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে।
এই কৌশলের মাধ্যমে গুগলের উদ্দেশ্য, ব্যবহারকারীদের প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন কেনায় আগ্রহী করে তোলা। এজন্য ইউটিউব সীমিত সময়ের জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত প্রিভিউ দেখানো বা কম বিজ্ঞাপনসহ সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান পরীক্ষাও চালাচ্ছে।
এদিকে ইউটিউব অ্যাডব্লকার প্রযুক্তির কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে কাজ করছে, বিশেষ করে ক্রোম ব্রাউজারে ইউটিউব দর্শনের ক্ষেত্রে।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, ভিডিওর আবেগঘন বা নাটকীয় মুহূর্তে হঠাৎ বিজ্ঞাপন চালু হলে দর্শক মনস্তাত্ত্বিকভাবে সাড়া না দিয়ে বিরক্ত হবেন। এর ফলে বিজ্ঞাপনদাতার প্রত্যাশিত ফল মিলবে না, বরং দর্শকের ইউটিউব অভিজ্ঞতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সোর্স: ডিজিটাল ট্রেন্ডস
বিডি প্রতিদিন/আশিক