চমৎকার প্রথম ওভারের পর লাইন-লেংথে কিছুটা গড়বড় করে ফেললেন মুস্তাফিজুর রহমান। দ্বিতীয় ওভারে করলেন খরুচে বোলিং। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ালেন দিল্লি ক্যাপিটালসের বাঁহাতি পেসার। ৩ উইকেট নিয়ে এবারের আইপিএলের শেষটা রাঙালেন তিনি।
জয়পুরে শনিবার পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ৪ ওভার করে ৩৩ রান খরচ করেন মুস্তাফিজ। দিল্লির বোলারদের মধ্যে মিতব্যয়ী ছিলেন তিনিই। ২৪ বলের মধ্যে দুইটি ছক্কা ও একটি চার হজম করেন মুস্তাফিজ। ৮টি বলে প্রতিপক্ষকে রান নিতে দেননি তিনি।
এদিন আরও দুইটি উইকেট পেতে পারতেন মুস্তাফিজ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে জশ ইংলিসের ফিরতি ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে তিনি ও আরেকজন ফিল্ডার তালগোল পাকিয়ে মাটিতে ফেলেন মার্কাস স্টয়নিসের ক্যাচ।
ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে এসে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া দিল্লিকে সাফল্য এনে দেন মুস্তাফিজ। প্রিয়াংশ আরিয়াকে ফিরিয়ে ৫ রান দিয়ে ওভার শেষ করেন তিনি। ওভারের প্রথম চার বলে কেবল ৩ রান দেন মুস্তাফিজ। পঞ্চম ডেলিভারিটি কিছুটা টেনে করেন তিনি। অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলটি পুল করেন আরিয়া। ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠে যায় উপরে। অনেকটা পিছিয়ে ক্যাচ গ্লাভসে জমান ট্রিস্টান স্টাবস। মুস্তাফিজের শেষ বলে ডাবল নেন ইংলিস।
চতুর্থ ওভারে ফের বল হাতে পেয়ে প্রথম ডেলিভারিতে চার হজম করেন মুস্তাফিজ। পরের বলটি ডট খেলেন প্রাভসিমরান সিং। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে ইংলিসকে দেন তিনি। এবার বলটি ব্যাটসম্যানের পায়ের ওপর করেন মুস্তাফিজ। জায়গা বানিয়ে লেগ সাইড দিয়ে ছক্কায় ওড়ান ইংলিস। পরের বলে আসে ডাবল। শেষ বলে ইংলিসের ফিরতি ক্যাচ ছাড়েন বোলার। ওভারটি থেকে আসে ১৪ রান।
ওই ক্যাচ ধরতে গিয়ে আঙুলে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছেড়ে উঠে যান মুস্তাফিজ। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সেরে উঠে ষোড়শ ওভারে আবার বোলিংয়ে আসেন তিনি। এবার শুরুটা করেন দারুণ। প্রথম তিন বলে দেন কেবল দুটি সিঙ্গেল। আঙ্গেলে বেরিয়ে যাওয়া চতুর্থ ডেলিভারিটিতে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন শাশাঙ্ক সিং। পরের দুই বলে দুটি সিঙ্গেলে স্রেফ ৪ রান দিয়ে ওভার শেষ করেন মুস্তাফিজ।
শেষ ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম দুই বলে এক রান দেন তিনি। তৃতীয় বলে কট বিহাইন্ড করে ফেরান মার্কো ইয়ানসেন। অনেকটা সময় অপেক্ষার পর আঙুল তোলেন আম্পায়ার। ওভারটি দারুণভাবে শেষ করার সুযোগ ছিল মুস্তাফিজের সামনে। কিন্তু নতুন ব্যাটসম্যান হারপ্রিত ব্রারকে করেন বসেন তিনি ফুল লেংথে বল। গ্যালারিতে নিয়ে ফেলেন বাঁহাতি ব্রার। পরের বলে আসে একটি সিঙ্গেল।
শেষ বলে মুস্তাফিজের বাউন্সারে উপরে তুলে দেন স্টয়নিস। ক্যাচ নিতে মুস্তাফিজের পাশপাশি মিড অন থেকে দৌড়ে আসেন অন্য ফিল্ডারও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বলের কাছে গিয়েও দ্বিধায় পড়ে ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি দুইজনের কেউ। ওভারটি থেকে আসে ১০ রান।
গত নভেম্বরের মেগা নিলামে অবিক্রিত মুস্তাফিজকে আসরের শেষ দিকে এসে বদলি ক্রিকেটার হিসেবে ৬ কোটি রুপিতে দলে যোগ করে দিল্লি। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে নিজের প্রথম ম্যাচে ৩ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ছিলেন তিনি উইকেটশূন্য।
গত বুধবার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ৩০ রান দিয়ে ফেরান রোহিত শার্মাকে। আর এবার ধরলেন আরও তিন শিকার। সব মিলিয়ে পাঁচ দলের হয়ে খেলে ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি এই টুর্নামেন্টে ৬০ ম্যাচে মুস্তাফিজের উইকেট এখন ৬৫টি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ