হামজা দেওয়ান চৌধুরী বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সিতে খেলার জন্য ইংল্যান্ড থেকে সিলেটে এসেছেন। সেখান থেকে হবিগঞ্জ। তাকে ঘিরে সিলেট ও হবিগঞ্জ তো বটেই, দেশজুড়ে উৎসবে মেতেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। বাংলাদেশে আসার আগে গত রবিবার রাতে দারুণ একটা ম্যাচ খেলে এসেছেন তিনি। লিস্টার সিটি থেকে ধারে বর্তমানে খেলছেন শেফিল্ড ইউনাইটেডে। এ দলের হয়ে রবিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় খেলতে নেমেছিলেন শেফিল্ড ওয়েনসডের বিপক্ষে। এ ম্যাচে হামজার দল জয় পায় ১-০ গোলে। পুরো ম্যাচে দুরন্ত পারফর্ম করে ম্যাচের সেরা রেটিং পেয়েছেন তিনি। পাঁচের মধ্যে সাড়ে চার। জয়ের ধারার মধ্যেই ছিলেন হামজা। এবার আরও একটা জয় পেতে চান তিনি। দেশের মাটিতে পা রেখেই ব্যাঘ্র হুঙ্কারে জানিয়ে দিলেন, ভারতকে হারাতে পারে বাংলাদেশ।
প্রতিবেশী ভারতের বিপক্ষে যে কোনো খেলায় মুখোমুখি হলে বাড়তি আগ্রহ থাকে বাংলাদেশের ক্রীড়ামোদীদের। বেশির ভাগ সময়ই পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হয়। মাঝে মধ্যে জয়ের স্বাদ মেলে। ফুটবলে সংখ্যাটা বেশ কম। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অনেক জয় আছে ভারতের বিপক্ষে। এমনকি নারী ফুটবলে জাতীয় দলও বেশ কয়েকটা ম্যাচে ভারতকে হারিয়েছে। কিন্তু ছেলেদের ফুটবলে জাতীয় দলের জয়ের সুখস্মৃতি এখন অতীতের গর্ভে। সেই স্মৃতি মলিন হতে হতে হারিয়েই যেতে বসেছে! হামজা চৌধুরীর আগমনে ফুটবলপ্রেমীদের মনের কোণে উঁকি দিচ্ছে নানা রকমের সুখস্বপ্ন। ভারতকে ক্রিকেটে বেশ কয়েকবার হারিয়েছে বাংলাদেশ। ফুটবলেও কি সেই স্বাদ মিলবে? হামজা চৌধুরী এখন স্বপ্নসারথি। তিনি বলেছেন, ‘দেশে ফিরে ভালো লাগছে। আমি খুবই রোমাঞ্চিত। কোচ কাবরেরার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছি। সে অনুযায়ী খেলতে পারলে আশা করি আমরা ভারতকে হারাতে পারব।’ আগামী ২৫ মার্চ শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। এই ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিচ্ছে কয়েক সপ্তাহ ধরে। ভারতও বেশ কয়েকদিন ধরে ক্যাম্প করছে শিলংয়ে। দুই দেশের প্রস্তুতি ও বাক যুদ্ধ ফুটবলে নতুন যুগের সূচনারই যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাংলাদেশের ফুটবলকে নতুন দিনের গল্প শোনাতেই আগমন হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলা একজন তারকার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে অনেক দূর। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হামজা নিশ্চয়ই তা অনুধাবন করেছেন এরই মধ্যে! তাকে ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের ভিড় তো তাই জানান দিচ্ছে।