বিশ্বজুড়ে আকাশপ্রেমীরা এই সপ্তাহে উপভোগ করতে পারবেন এক অপূর্ব মহাজাগতিক দৃশ্য—ওরায়নিড উল্কাবৃষ্টি। পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ দুই গোলার্ধ থেকেই এই উল্কাবৃষ্টি দেখা যাবে বলে জানিয়েছে নাসা।
ওরায়নিড উল্কাবৃষ্টির সর্বোচ্চ সময় বা ‘পিক টাইম’ হবে মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ। এই উল্কাগুলোর উজ্জ্বল রেখা দেখা যাবে আকাশজুড়ে। তবে এই উল্কাবৃষ্টি নির্দিষ্ট মুহূর্তে থেমে যায় অর্থাৎ, মঙ্গলবার আকাশ মেঘলা থাকলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। পরবর্তী কয়েক রাতেও প্রায় একই দৃশ্য দেখা যাবে।
এ বছর নতুন চাঁদের সময়ই উল্কাবৃষ্টির শীর্ষ সময় পড়েছে। ফলে চাঁদের আলো না থাকায় উল্কার উজ্জ্বল রেখাগুলো আরও স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ২০টি পর্যন্ত উল্কা দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান মিটিওর সোসাইটি।
ওরায়নিড উল্কাগুলো খুব দ্রুতগতির। এরা মাত্র এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের জন্য দৃশ্যমান হয়। উজ্জ্বল উল্কাগুলো কখনো কখনো ধোঁয়ার মতো রেখা তৈরি করে, যা কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়।
যদি ভাগ্য ভালো থাকে দর্শকরা একই সময় সাউদার্ন টরিড উল্কাবৃষ্টিও দেখতে পারেন, যার সর্বোচ্চ সময় হবে ৪–৫ নভেম্বর, পূর্ণিমার কাছাকাছি সময়ে। ওরায়নিড উল্কাগুলো আসে ওরায়ন নক্ষত্রমণ্ডল থেকে। আর টরিড উল্কাগুলো আসে বৃষ নক্ষত্রমণ্ডল থেকে। একে অনেকটা আকাশে দুই দিক থেকে ছুটে আসা আলোক রেখার মতো মনে হবে। সোমবার রাত ১০টার দিকে অথবা ভোর ৪–৫টার মধ্যে দক্ষিণমুখী আকাশে তাকালে সবচেয়ে ভালোভাবে উল্কাগুলো দেখা যাবে।
উৎপত্তি কোথায়
ওরায়নিড উল্কাবৃষ্টি ঘটে যখন পৃথিবী হ্যালির ধূমকেতুর ফেলে যাওয়া ধূলিকণার ভেতর দিয়ে অতিক্রম করে। হ্যালির ধূমকেতু প্রতি ৭৬ বছরে একবার পৃথিবীর কক্ষপথ অতিক্রম করে। এটি অক্টোবর মাসে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করে ওরায়নিড উল্কাবৃষ্টি সৃষ্টি করে এবং মে মাসে বেরিয়ে গিয়ে সৃষ্টি করে ইটা অ্যাকুয়ারিড উল্কাবৃষ্টি। হ্যালির ধূমকেতু পৃথিবী থেকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৮৬ সালে। নাসার হিসেবে, এটি আবার দৃশ্যমান হবে ২০৬১ সালে।
আগামী উল্কাবৃষ্টি ও পূর্ণচাঁদ
সাউদার্ন টরিড: ৪–৫ নভেম্বর
নর্দার্ন টরিড: ১১–১২ নভেম্বর
লিওনিডস: ১৬–১৭ নভেম্বর
জেমিনিডস: ১৩–১৪ ডিসেম্বর
উরসিডস: ২১–২২ ডিসেম্বর
এছাড়া, এ বছর আরও দুটি সুপারমুন (খুব কাছাকাছি অবস্থানের পূর্ণচাঁদ) দেখা যাবে—
৫ নভেম্বর: বিভার মুন
৪ ডিসেম্বর: কোল্ড মুন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল