রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিতে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, এসব নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা হলেও কোনো সম্মানজনক দেশ চাপের মুখে সিদ্ধান্ত নেয় না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানি রসনেফট (Rosneft) এবং লুকওইল (Lukoil)-এর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। এই দুই কোম্পানি বিশ্বে মোট তেল উৎপাদনের পাঁচ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রায় পাঁচ শতাংশ বেড়ে যায়।
নিষেধাজ্ঞার পর চীনের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানিগুলো অস্থায়ীভাবে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করেছে। ভারতের রিফাইনারিগুলোকেও (তেল শোধনাগার) আমদানি কমাতে দেখা গেছে। যদিও স্বল্পমেয়াদে রাশিয়ার অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লাগবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবু এটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ যার লক্ষ্য রাশিয়ার অর্থনৈতিক চাপ বাড়িয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি বা শান্তি আলোচনায় বাধ্য করা।
পুতিন বলেন, রাশিয়া বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি সরবরাহ কমে যায়, তাহলে তেলের দাম আরও বাড়বে, যা যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের জন্য সমস্যা তৈরি করবে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, পুতিন যদি মনে করেন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কম হবে, সেটি ভালো। ছয় মাস পর দেখা যাবে বাস্তবতা কী।
সম্প্রতি ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে নির্ধারিত সম্মেলন বাতিল হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, বৈঠকটি আয়োজন করলে কাঙ্ক্ষিত ফল আসবে না বলে মনে হয়েছে। পুতিন অবশ্য জানান, বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে, বাতিল নয়।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করে আগামী দুই বছরের জন্য ইউক্রেনের আর্থিক সহায়তার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন। তবে বেলজিয়ামের আপত্তির কারণে রাশিয়ার আটক রাখা সম্পদ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়ার প্রস্তাবটি অনুমোদন পায়নি। মস্কো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, এমন সম্পদ জব্দ করা হলে ‘কঠোর প্রতিক্রিয়া’ জানানো হবে।
জেলেনস্কি নতুন নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, তবে রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে আনতে আরও আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োজন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল