রাজধানীর মিরপুরে দোকানে ঢুকে পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে (৪৭) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সন্ধ্যায় মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সি ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সি ব্লকে বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি দোকানে ঢোকেন গোলাম কিবরিয়া। এ সময় মোটরসাইকেলযোগে আসা তিন দুর্বৃত্ত ওই দোকানে ঢুকে তাঁর মাথা, বুক ও পিঠে ৭ রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ৭ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। এদিকে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কিবরিয়া দোকানে ঢোকার দুই-তিন সেকেন্ডের মধ্যে কয়েক দুর্বৃত্ত ঢুকে তাঁকে গুলি করতে শুরু করে। কিবরিয়া দোকানে চেয়ার ধরে লুকানোর চেষ্টা করেন। পাশে অন্যরা থাকলেও অস্ত্রধারীদের কিছুই করতে পারেননি। মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের একজনের পরনে পাঞ্জাবি, একজনের গায়ে শার্ট ও আরেকজনের গায়ে শার্টের ওপর শীতের চাদর জড়ানো ছিল। প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট ও মুখে মুখোশ ছিল। এ সময় দোকানে নয়জন ছিলেন। দুর্বৃত্তদের একজন কিবরিয়াকে গুলি করতে শুরু করলে ভয়ে দোকান থেকে আগের লোকজন বেরিয়ে যান। আর দুজন লুকিয়ে পড়েন। কিবরিয়াকে দুজন এলোপাতাড়ি গুলি করে। কিবরিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে আরও তিনটি গুলি করে দুর্বৃত্তরা দ্রুত বেরিয়ে যায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরও গোলাম কিবরিয়াকে গুলি করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে শেরেবাংলানগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশার জানান, গোলাম কিবরিয়াকে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মহানগরী উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, গোলাম কিবরিয়া পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। তাঁর গায়ে ৯টি গুলি লেগেছে। তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে মিরপুর সাড়ে ১১-তে ফলপট্টিসংলগ্ন ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলবে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, কিবরিয়াকে গুলি করার ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাটারিচালিত এক অটোরিকশাচালককেও গুলি করে। চালকের নাম আরিফ হোসেন (১৮)। ঢামেক হাসপাতালে আরিফ বলেন, দুই যুবক হেলমেট পরা অবস্থায় দৌড়ে তার রিকশায় উঠে পিস্তল ঠেকিয়ে দ্রুত চালাতে বলে। দেরি হওয়ায় তারা তাকে গুলি করে। পরে এক পথচারী তাকে ঢামেকে নিয়ে আসেন। আরিফ পল্লবীতে থাকেন বলে জানান। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, গুলিবিদ্ধ আরিফের চিকিৎসা চলছে। তবে সে শঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
গলা কাটা লাশ উদ্ধার : এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় উত্তরা দিয়াবাড়ীতে খালি প্লটের ছনের খেত থেকে অজ্ঞাত এক তরুণের গলা কাটা লাশ উদ্ধার হয়েছে। বয়স আনুমানিক ২০। তাৎক্ষণিক পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, দুষ্কৃতকারীরা তাকে হত্যা করে ওই স্থানে ফেলে রেখে যায়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।