চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের এ খবর বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, কাতার-ভিত্তিক আলজাজিরা, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনসহ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে এটি ‘প্রধান খবর’ হিসেবে প্রকাশ ও প্রচার করা হচ্ছে। বিবিসি তাদের খবরের শিরোনাম করেছে, ‘বিক্ষোভকারীদের ওপর বর্বর দমন-নিপীড়ন চালানোয় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’ সংবাদমাধ্যমটি হাসিনার রায়ের খবর সরাসরি সম্প্রচার করেছে।
আলজাজিরা শিরোনাম করেছে- ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’ সিএনএন তাদের খবর করেছে ‘বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড।’
বার্তা সংস্থা এএফপির শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের দায়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার মৃত্যুদণ্ড।’ ব্রিটিশভিত্তিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান শিরোনাম করেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড।’
ভারতের প্রায় প্রত্যেকটি গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার রায়কে অন্য সব খবরের চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশটির প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি লিখেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড।’ ইন্ডিয়া টুডে লিখেছে, ‘শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পেলেন মৃত্যুদণ্ড। সাবেক পুলিশ প্রধান রেহাই পেলেন মৃত্যুদণ্ড থেকে।’ বার্তাসংস্থা আনাদোলু তাদের শিরোনামে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড।’ পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমেও হাসিনার রায়ের খবরকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। লঙ্কান সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর তাদের শিরোনামে লিখেছে, ‘ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড।’
পাকিস্তানের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য ডন লিখেছে, ‘ছাত্রদের আন্দোলনে দমন-নিপীড়ন চালানোয় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড।’ জিও টিভির শিরোনামও প্রায় একইরকম ছিল। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বছরের ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে চলে যান তিনি। এখনো সেখানেই আছেন এ মানবতাবিরোধী অপরাধী।