মৎস্য অধিদপ্তরের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহারের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৬টি গাড়ি বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত আরও ১৭টি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এসব গাড়ি ব্যবহার করে বিল-ভাউচারের নামে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন মৎস্য অধিদপ্তরের প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৬টি গাড়ি ব্যবহারের অনুমদোন দেয় সরকার। সে বছর অতিরিক্ত আরও ১৭টি গাড়ি ব্যবহার করে মৎস্য অধিদপ্তর। তালিকাবহির্ভূত গাড়ি ব্যবহারে জ্বালানি ও মেরামত বাবদ রাষ্ট্রের প্রায় ৩৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১৬টি গাড়িতে জ্বালানি বাবদ ২৬ লাখ ৭৪ হাজার ৯১০ টাকা। তিনটি গাড়িতে মেরামত বাবদ ২ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা এবং ১১টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, নবায়ন, নম্বর প্লেট ও ট্যাক্স টোকেন বাবদ ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৭০২ টাকাসহ ৩৬ লাখ ৯৩ হাজার ২৭২ টাকা উত্তোলন করা হয়।
২০০৬ সালের পরিপত্র অনুযায়ী, প্রকল্প শেষে ৬০ দিনের মধ্যে এসব গাড়ি পরিবহনপুলে জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। অচল গাড়ির ক্ষেত্রে, তা বিক্রি করে অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। মৎস্য অধিদপ্তরের প্রকল্প শেষ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব গাড়ি নিজেদের কাজে ব্যবহার করেছেন। তাদের অনেকের বদলি, চাকরি থেকে অবসর নিলেও দীর্ঘ সময় এসব গাড়ি দপ্তরে ব্যবহার হচ্ছে। কয়েকজন চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তালিকাবহির্ভূত গাড়ির কয়েকটি ঢাকার বাইরের দপ্তরের কাজে এবং বাকিগুলো ঢাকায় কর্মকর্তাদের কাজে ব্যবহার করা হয়।
অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকাবহির্ভূত গাড়ি ব্যবহারের কারণ দপ্তরের গাড়িসংকট। সরকার মৎস্য অধিদপ্তরের জন্য গাড়ি বরাদ্দ করেনি দুই যুগের বেশি সময়। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে সমাপ্ত হওয়া প্রকল্পের গাড়ি মন্ত্রণালয়ের অনুমতিতে ব্যবহার করা হয়। তালিকাবহির্ভূত ১৭টি গাড়ির বেশির ভাগই প্রায় ৩০ বছরের পুরোনো। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের গাড়িসংকটের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। সংকটের কারণে তালিকাবহির্ভূূত গাড়ি ব্যবহার করা হয়। সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, কোনো কর্মচারী নিয়মবহির্ভূত খরচ করতে পারেন না। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।