জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সহযোগিতায় নরওয়ের অত্যাধুনিক সামুদ্রিক গবেষণা জাহাজ ‘আর ভি ড. ফ্রিডজোফ নানসেন’ আগামীকাল ২১ আগস্ট থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাসব্যাপী বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্যসম্পদ ও ইকোসিস্টেম জরিপ পরিচালনা করবে। গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এ তথ্য জানান। উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ। এ জরিপের মাধ্যমে মৎস্যসম্পদের মজুত নিরূপণ, ইকোসিস্টেম পর্যবেক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্লেষণ করা হবে। উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, গবেষকরা উপকূলীয় এবং গভীর সমুদ্রে বিদ্যমান ছোট আকারের পেলাজিক ও মেসোপেলাজিক মাছের আপেক্ষিক প্রাচুর্যতা ও মজুত নির্ধারণসহ ইকোসিস্টেমের সার্বিক অবস্থা নিরুপণ করা হবে। যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে টেকসই আহরণের সীমা নির্ধারণের পাশাপাশি গভীর ও আন্তর্জাতিক সমুদ্র অঞ্চলে বাণিজ্যিক মৎস্যসম্পদের অনুসন্ধান ও আহরণে বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। জরিপের সময় সমুদ্রের পানির স্তর ও কলামের তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, পুষ্টি উপাদান, ঘোলাভাব, উৎপাদনশীলতা, স্রোতের দিক ও গতি ইত্যাদি পরিমাপ করা হবে।
উপদেষ্টা জানান, মেসোপেলাজিক মাছ এবং প্ল্যাঙ্কটন সমুদ্রের খাদ্য শৃঙ্খলের মূল ভিত্তি। গভীর সমুদ্র অঞ্চলে এদের জৈবভর, প্রজাতিগত বৈচিত্র্য ও বিতরণ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
তিনি বলেন, গবেষণা জাহাজ আর ভি ড. ফ্রিডজোফ নানসেন সর্বপ্রথম ১৯৭৯ সালে এবং দ্বিতীয়বার ১৯৮০ সালে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় জরিপ পরিচালনা করে।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে এফএও ও নরওয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন রিসার্চ (আইএমআর)-এর সহযোগিতায় জাহাজটি বঙ্গোপসাগরে মাছের মজুত ও ইকোসিস্টেম গবেষণা চালায়।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, এবারের জরিপ বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে একটি মাইলফলক। জরিপ থেকে পাওয়া বৈজ্ঞানিক তথ্য বাংলাদেশের মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ, টেকসই আহরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন এবং সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষায় জাতীয় নীতি প্রণয়নে সরাসরি সহায়তা করবে।
