দেশিবিদেশি জনপ্রিয় আমের জাত সম্প্রসারণে কাজ করছে চুয়াডাঙ্গার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তারা। এসব উদ্যোক্তার দাবি, তাদের কাছে অন্তত ৮০ প্রজাতির আমের জাত রয়েছে। বর্তমানে দেশি আমের মৌসুমেও তাদের বাগানে বেশ কিছু বিদেশি জাতের আম দেখা গেছে। গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে রংবেরঙের এসব আম।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার নিভৃত পল্লি রায়পুর, মানিকপুর ও দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা এলাকায় গিয়ে দেখা মিলেছে দেশি-বিদেশি রঙিন সব আমের। রায়পুর গ্রামের আবদুর রহিম, সাদ্দাম হোসেন ও হৃদয় হোসেন নামে তিন ভাই দীর্ঘদিন আধুনিক কৃষি নিয়ে কাজ করছেন। এখানে তারা দেশি-বিদেশি অন্তত ৮০ জাতের আমের চারা নিয়ে সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে কাজ করছেন। অন্যদিকে মানিকপুর গ্রামের সজল হোসেন ও দর্শনা হঠাৎপাড়ার সিরাজুল ইসলামও এসব জাতের আম নিয়ে কাজ করছেন। তাদের মাধ্যমে জনপ্রিয় এসব আমের চারা ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। সাদ্দাম হোসেন জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় বিদেশি আমের মধ্যে রয়েছে কিউজাই, চিয়াংমাই, ব্লাকস্টোন, চোষা আম, ব্রুনাইকিং, মিয়াজাকি, আলফানসো, ব্যানানা আম, কিং অব চাকাপাত প্রভৃতি। অন্যদিকে সজল হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ জেলায় বিদেশি জাতের পাশাপাশি বারোমাসি আমের মধ্যে রয়েছে থাই কাটিমন, চায়না ড্রপ ও বারি ১১। দেশি আমের মধ্যে রয়েছে গৌরমতি, বারি-৪, হাড়িভাঙা, হিমসাগর, ল্যাংড়া. তোতাপুরি প্রভৃতি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যতিক্রমী এসব আমের গাছ দেখতে ছুটে আসছেন অনেকে। শখের বসে কেউ কেউ সংগ্রহ করছেন এসব গাছের চারা। আগতরা বলছেন, একই সঙ্গে এত প্রজাতির ব্যতিক্রমী আমের সংগ্রহ সারা দেশে বিরল। চুয়াডাঙ্গা জেলায় সহজেই মিলছে দেশি-বিদেশি আমের চারাগাছ। আবদুর রহিম বলেন, এক বিঘা জমিতে ৭০/৮০টি বিদেশি আমের চারা রোপণ করা যায়। এসব গাছের সঠিক পরিচর্যা করলে দেশেই যেমন বিদেশি আম পাওয়া যাবে, সেই সঙ্গে কৃষি উদ্যোক্তারা অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হবেন।
তিনি বলেন, এসব জাতের আম উচ্চ মূল্যের হওয়ায় এক বিঘা জমিতে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তারা দেশি আমের পাশাপাশি বেশ কিছু বিদেশি আমের চাষাবাদ করছেন। অনেক ক্ষেত্রে তারা সফলতাও পাচ্ছেন। এভাবে এক সময় নতুন নতুন জাতের আম আমাদের দেশে প্রচলিত হবে। একই সঙ্গে বিদেশি আমের আমদানি নির্ভরতাও কমবে।